বাসস
  ০৩ মে ২০২৫, ২৩:২৪

চট্টগ্রামে মাইক্রোবাস তল্লাশি করে ৮টি অস্ত্র উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২

ছবি : বাসস

চট্টগ্রাম, ৩ মে, ২০২৫ (বাসস) : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মাইক্রোবাস তল্লাশি করে ৬টি ওয়ান শ্যুটার গান, একটি দেশীয় রাইফেল ও একটি একনলা বন্দুক উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় আগ্নেয়াস্ত্র বহনকারী দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। অস্ত্রগুলো কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে নোয়াখালীতে নেওয়া হচ্ছিল। মাইক্রোবাসের ভেতরে বিশেষভাবে তৈরি গোপন কুঠুরিতে অস্ত্রগুলো বিশেষ কায়দায় রাখা হয়।   

চট্টগ্রাম অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) রাসেল  আজ শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন বরিশাল জেলার বিমানবন্দর থানার ইছাকাঠি ইউনিয়নের মাঝি বাড়ির কাঞ্চন ঢালির পুত্র  মো. মনির হোসেন (৪৫) ও নোয়াখালী জেলার চাটখিল থানার রামনারায়ন ইউনিয়নের পাঁচঘরিয়া শামউদ্দিন পাটোয়ারি বাড়ির জয়নাল আবেদীনের পুত্র মো. মনির হোসেন (৪৮)।

চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর অঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ি এলাকা ব্যবহার করে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে দেশীয় অস্ত্র তৈরি ও মজুত করে আসছিল। পরে এসব অস্ত্র চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এই চক্রের সদস্যদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি চলছিল।

এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার বিকেলে পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতুর নির্দেশনায় এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিল্পাঞ্চল ও ডিবি) রাসেলের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি দল বাঁশবাড়িয়া বাজার এলাকায় চেকপোস্ট বসায়। বিকেল ৪টার দিকে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাসকে থামার সংকেত দিলে সেটি পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ধাওয়া করে মাইক্রোবাসটি জব্দ করে এবং ওই দুই ব্যক্তিকে আটক করে।

পরে সাক্ষীদের উপস্থিতিতে মাইক্রোবাসের ভেতরের গোপন কুঠুরি থেকে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা অস্ত্রগুলো মহেশখালী থেকে সংগ্রহ করে নোয়াখালীতে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছিল বলে স্বীকার করেছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সীতাকুন্ড মডেল থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল জানান, চক্রটি অস্ত্র পাচারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে মাইক্রোবাস ব্যবহার করে আসছে। সন্দেহ এড়াতে তারা কখনও যাত্রীবাহী, কখনও মালবাহী হিসেবে গাড়ি চালাত এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে গাড়ির ভেতরে গোপন কুঠুরি তৈরি করেছিল। মহেশখালী থেকে চট্টগ্রাম হয়ে নোয়াখালীতে অস্ত্র পাঠানোর জন্য এই রুট ও কৌশলকে তারা ‘নিরাপদ’ মনে করত।

তিনি আরও জানান, অস্ত্র সরবরাহকারী চক্রটি অত্যন্ত সংগঠিত ও সুপরিকল্পিত কৌশলে অস্ত্র পাচার করছিল। এই অভিযান অস্ত্র পাচারকারী সিন্ডিকেটে বড় ধাক্কা দিয়েছে। চক্রের  অন্য সদস্যদের শনাক্ত করতে অভিযান চলছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।