শিরোনাম
ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শেখ হাসিনার ১৫ বছরের অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার ও হত্যাসহ প্রতিটি ঘটনার তথ্য লিখে রাখতে গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, যাতে আর কেউ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দানব হয়ে না যান সে কারণে জুলাই-আগস্ট জুড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর যে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে তার তথ্য লিখে রাখা প্রয়োজন।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে অধ্যাপক মো. শাহ আলমের সেরা সংকলন হৃদয়ে জুলাই-৩৬ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
এতে বক্তব্য রাখেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ ।
শফিকুল আলম বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানিতে কী হয়েছিল সে বিষয়ে প্রচুর বই রয়েছে। বিগত শেখ হাসিনার সরকারের ১৫ বছরের ঘটনা ইতিহাস করে রাখা উচিত। আমাদের সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিগত সরকারের ১৫ বছরের ঘটনা নিয়ে প্রচুর রিপোর্ট করেছে।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একজন সাধারণ মানুষকে জঙ্গি বানিয়ে দিয়েছে প্রমোশনের জন্য। এসব ঘটনা নিয়ে প্রচুর গবেষণা করা উচিত এবং প্রচুর বই লেখা উচিত। আমাদের সন্তানেরা এই ধরনের একটা স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়েছে রক্তের বিনিময়ে তাদেরকে সেলুট দেয়া উচিত।
ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের আর কোনো দানব তৈরি না হয় সেজন্য হত্যার বিচার দ্রুত করা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আমাদের পাশের কোনো দেশে পুলিশ এভাবে তার দেশের মানুষের ওপর এ ধরনের বর্বর হামলা চালায়নি। জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে প্রায় ৫০০ জন ছাত্র-জনতা অন্ধ হয়ে গেছে। বিগত সরকারের মামলার কারণে অনেকে বাড়িতে থাকতে পারেনি। তারা ঢাকায় এসে উবার, পাঠাও অথবা রিকশা চালিয়েছে। এসব তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার বিএনপির একজন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতার নামেও ৩০-৫০ টি মামলা দিয়েছিল। আমরা শুধু গুম-খুন দেখেছি কিন্তু নীরবে দেশে ভয়াবহভাবে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিএনপির একজন ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা অথবা সমর্থকের ছেলে পুলিশের কনস্টেবলের চাকরি পেলে তার চাকরি কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিসিএস পরীক্ষায় পাস করে চাকরি পেয়েছেন কিন্তু দেখা গেছে তার বাবা অথবা দাদা বিএনপির একজন ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা তার চাকরিটিও কেড়ে নেয়া হয়েছে। জামায়াতের বিষয়ে তো কোনো কথাই নেই।
তিনি আরও বলেন, আমাদের চোখের সামনে এটি হয়েছে। ঢাকায় একটা ককটেল ফুটলে দেখা গেছে কারো বাড়ি মাগুড়া তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে গেছে। বিএনপির প্রায় ৬০ লাখ নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে দেয়া হয়েছে বলে শুনেছি।
তিনি বলেন, দেশ থেকে পলাতক স্বৈরাচার সরকার পতন দেশের মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহি:প্রকাশ। সরকার বিরোধীদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক করে রাখা হয়েছিল। এ বিষয়টি কারো কারো জন্য দুর্বিষহ হয়ে গিয়েছিল।
প্রফেসর মো. শাহ আলম ফ্যাসিবাদের বিরোধী ছিলেন বলে তার জীবনটা দুর্বিষহ করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এভাবে হাজার হাজার মানুষ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে স্বৈরাচার সরকারের দমন পীড়নে। তারা দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুর ট্রাক দিয়ে রাস্তা আটকে দেয়া হয়েছিল। বাংলাদেশে একজন হিন্দু প্রধান বিচারপতিকে নির্যাতন করে দেশ ছাড়া করা হয়েছিল। এটি দেশের মানুষের মনে রাখা প্রয়োজন।