বাসস
  ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৪৫
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭:৫১

এটি প্রাতিষ্ঠানিক ও ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ : সুপ্রীম কোর্ট সচিবালয়ের উদ্বোধন শেষে প্রধান বিচারপতি

বৃহস্পতিবার সুপ্রীম কোর্ট সচিবালয়ের উদ্বোধন করেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। ছবি : বাসস

ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আজ সুপ্রীম কোর্ট সচিবালয়ের উদ্বোধন করেছেন। এ সময়, এ বহুল আকাঙ্ক্ষিত এ মুহূর্তকে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক ও ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ বলে অভিহিত করেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিট সুপ্রীম কোর্টের প্রশাসনিক ভবন-৪ (সুপ্রীম কোর্ট জামে মসজিদ সংলগ্ন) এলাকায় প্রস্তরফলকের কাপড় সরিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এ ভবনের উদ্বোধন করেন। এসময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, এটর্নী জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলর সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারম্যান সিনিয়র এডভোকেট জয়নুল আবেদীন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আজকে আমরা প্রকৃত অর্থে প্রাতিষ্ঠানিক এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি। এখানে যাদেরকে দেখছেন প্রত্যেকেই কোনো না কোনো ভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের সহযোগিতায় এবং অংশীদার হিসেবে আমরা কিন্তু সকলে সম্মিলিত হয়ে এই প্রাপ্তি অর্জন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, তবে, আমাদের যাত্রা কিন্তু এখানেই শেষ না। আমাদের এখন সবচেয়ে বড় যে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে সেটা হচ্ছে এই সচিবালয়ের যে কার্যক্রম তার স্থায়িত্ব বজায় রাখা। সামনের মাস এবং বছরগুলো বলে দেবে সেটা আমরা কত সাফল্যের সাথে সেটা আমরা অর্জন করতে পারব।

সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বিচারকার্য পরিচালনা করার আমাদের সাংবিধানিক ক্ষমতা এবং বিচার ব্যবস্থা পরিচালনা করা সেটা কিন্তু সবকিছু একীভূত হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টের কাছে। এটার সাফল্য যতটা আমাদের অর্জন হিসেবে গণ্য হবে, আবার এটার ব্যর্থতাও কিন্তু আমাদেরকে আমাদের মেনে নিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, সেই দিক থেকে আমি সবার কাছে আমার আহ্বান রইলো আগামীতে যে নির্বাচিত সরকার আসবেন তাদের তো বটেই এবং আমাদের যত অংশীদার আছেন তাদের সবাইকে আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা কে বজায় রাখবেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ নভেম্বর বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও কার্যকর তদারকি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণার মধ্য দিয়ে দেশের বিচার ব্যবস্থায় নতুন মাইলফলক সূচিত হয়।

এদিন রাষ্ট্রপতির নির্দেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি করে।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ অধ্যাদেশের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করে, যা পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনের দীর্ঘদিনের দাবিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার পথ সুগম করে।

উল্লেখ্য, বিচার বিভাগের কাঠামোগত স্বাধীনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতাকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে গত বছরের ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনের প্রস্তাব আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

প্রস্তাবে সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের আলোকে হাইকোর্ট বিভাগের অধস্তন আদালত ও ট্রাইবুনালের ওপর তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ কার্যকরভাবে পালনের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়। সঙ্গে অধ্যাদেশের খসড়া, নতুন সচিবালয়ের অর্গানোগ্রাম এবং রুলস অব বিজনেস ও এ্যলোকেশন অব বিজনেস সংশোধনের সম্ভাব্য রূপরেখা পাঠানো হয়।

সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি ও তা উদ্বোধনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক সহযোগিতায় বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন আজ বাস্তবরূপ নিল।