বাসস
  ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:০২
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬:২১

জনপ্রিয়তার এমন দৃষ্টান্ত শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বে বিরল : নজরুল ইসলাম খান

বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান । ফাইল ছবি

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জানাজার আগমুহূর্তে তাঁর স্মৃতিচারণ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘তাঁর মতো জনপ্রিয়তার দৃষ্টান্ত শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্ব রাজনীতিতেও বিরল। তিনি ছিলেন এমন এক নেতা, যিনি প্রতিকূলতা, দমন-পীড়ন ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মধ্যেও জনগণের ভালোবাসা ও আস্থা অটুট রাখতে পেরেছেন।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন জনগণের সরাসরি ভোটে। প্রতিটি জাতীয় নির্বাচনে তিনি একাধিক আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সবকটিতেই বিজয়ী হয়েছেন, যা তাঁর প্রতি জনগণের গভীর আস্থার প্রমাণ। এমন জনপ্রিয়তা কেবল বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও বিরল ঘটনা।’

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন কিংবা ক্ষমতার বাইরে থাকা উভয় অবস্থাতেই বেগম খালেদা জিয়া জনগণের পাশে থেকেছেন। ক্ষমতার মোহ তাঁকে কখনো আপসের পথে নিতে পারেনি। দেশ ও দেশের মানুষের স্বার্থে তিনি ছিলেন আপসহীন। কোনো দেশি বা বিদেশি অপশক্তির সামনে তিনি কখনো মাথা নত করেননি।’

নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, ‘দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচারী এরশাদবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ১৯৯১ সালে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তিনি গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন। গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর এই অঙ্গীকারের কারণেই দেশ-বিদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষ তাঁকে ‘গণতন্ত্রের মাতা’ হিসেবে সম্মান জানিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম এবং মুসলিম বিশ্বে দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। নারী নেতৃত্বের ক্ষেত্রে তিনি একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

তাঁর শাসনামলে নারী শিক্ষার প্রসারে উপবৃত্তি কর্মসূচি, শিক্ষার জন্য খাদ্য কর্মসূচি, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবাসীদের কল্যাণে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনসহ বহু যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা তাঁকে বারবার হয়রানি করেছে। মিথ্যা মামলায় কারারুদ্ধ করা, গৃহহীন করা এমনকি চিকিৎসার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত করা হয়েছিল। তবুও তিনি কখনো আদর্শচ্যুত হননি, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের প্রশ্নে আপস করেননি।’

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের পর কারাবাস ও গৃহবন্দিত্বকালে উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে তাঁর শারীরিক অবস্থা গুরুতরভাবে অবনতি ঘটে। দেশ-বিদেশের চিকিৎসকরাও একমত যে সময়মতো চিকিৎসা পেলে তাঁর জীবন আরো দীর্ঘ হতে পারতো। কিন্তু সব কষ্ট সহ্য করেও তিনি ছিলেন অটল ও দৃঢ়চেতা।’

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তা, নেতৃত্ব, সাহস ও ত্যাগের ইতিহাস চিরকাল অম্লান থাকবে।

তিনি যে ভালোবাসা পেয়েছেন দেশের মানুষের কাছ থেকে, তা ইতিহাসে বিরল। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের জন্য তাঁর জীবন ও কর্ম এক অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ ও রাজনৈতিক দর্শনকে ধারণ করে তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি গণতন্ত্র, শান্তি, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণের পথে এগিয়ে যাবে।’