শিরোনাম
।। রোস্তম আলী মণ্ডল।।
দিনাজপুর, ২ আগস্ট ২০২৫ (বাসস): ২০২৪ সালে জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ২ আগস্ট দিনাজপুর শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংর্ঘষ হয়। এতে অনেক ছাত্র ও নেতা-কর্মী আহত হন। মুহূর্তেই যেন রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ঘটনাস্থল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২ আগস্ট দিনাজপুর শহরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ডাকা শাটডাউনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো মিছিল মিটিং বা সমাবেশ লক্ষ্য করা যায়নি। তবে দূর পাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের পরতে হয় চরম বিপাকে।
জেলার কয়েকজন আন্দোলনকারী জানান, দুপুর ২টার পর থেকে দিনাজপুর শহরে আতঙ্ক নামে। শহরের লিলির মোড় থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি বিশাল বিক্ষোভ মিছিল চারু বাবুর মোড় হয়ে বাসুনিয়াপট্টি আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দিকে অগ্রসর হয়।
এ সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের দলীয় নেতা কর্মীদের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়। এতে শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। পরে পুলিশও যোগ দেয় সংঘর্ষে। আন্দোলনকারী, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয় সেখানে।
সে সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার সেল ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। বিক্ষোভকারীরাও পুলিশকে লক্ষ করে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে, এতে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল।
বিক্ষোভকারীরা দফায় দফায় শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে থেকে মিছিল বের করে এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। কিন্তু পুলিশ বার বার ছত্রভঙ্গ করে দিলেও আবার একত্রিত হয়ে তারা বিক্ষোভ করেন।
এর মধ্যে আন্দোলনকারীরা সরকারি কলেজের সামনে থেকে একটি মিছিল শহরের বাসুনিয়াপট্টি হয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় যান। এ সময় সেখানে আন্দোলনকারীদের পক্ষে ভাংচ’র ও মোটরসাইকেল পুরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ২ জন আন্দোলনকারীকে আটক করে।
সে সময় দিনাজপুর পুলিশের মিডিয়া সেল থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়ে ছিল, সাধারণ শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে কতিপয় বহিরাগত ও বিএনপি, জামায়াতের সক্রিয় সদস্যরা দেশ অস্থিতিশীল করতে এসব কর্মকাণ্ড ঘটাচ্ছে।
তবে এ দিন থেকেই দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আরো জোরালো হতে থাকে। শহরের সর্বত্র থমথমে অবস্থা ছিল। সমস্ত দোকানপাট ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ছিল।