শিরোনাম
লক্ষ্মীপুর, ২৯ জুলাই ২০২৫(বাসস): বৈষম্যমূলক কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ২৯ জুলাই পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
এদিকে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবি তখন এক দফা দাবিতে রূপ নেয়। শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে মারমুখী হয়ে ওঠে আন্দোলনকারীরা। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে গেলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ঘরে না থেকে পুলিশের ভয়ে বাড়ির বাইরেই রাত পার করতো সেসময়।
২৯ জুলাই ২০২৪। সোমবার। সকাল ১০টা। হাতেগোনা কয়েকজন শিক্ষার্থী বাগবাড়িতে একটি মিছিল বের করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দিকে যেতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। এর কিছুক্ষণ পর ঝুমুর চত্বরে জড়ো হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। সেখানেও থাকে পুলিশের কঠোর নজরদারি।
সেদিনই বেলা ১১টার দিকে লক্ষ্মীপুর জজকোর্টের সাবেক পিপি আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিনসহ কয়েকজন আইনজীবী সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ছবি তুলতে থাকে। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর- সার্কেল) সোহেল রানাকে শিক্ষার্থীদের মিছিলে বাধাদান ও অংশগ্রহণকারীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। তবে পুলিশ কর্মকর্তা পিপি জসিমের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করায় তিনি ও তার দল ঝুমুর চত্বর থেকে সরে যান। তার কিছুক্ষণ পরই শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে বাজার হয়ে উত্তর তেমুহানীর দিকে যাওয়ার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেয়। সেখানেই মিছিল থেমে যায়।
ঐ মিছিল থেকে শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার না করলেও পরে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের বাড়িতে গিয়ে চলে পুলিশের গণগ্রেফতার। এদিন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জামায়াতে ইসলামীর ১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এইভাবে প্রতিদিনই চলে গণগ্রেফতার।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রত্যেক আন্দোলনের পেছনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ইসলামী ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সক্রিয় ছিল। যত দিন যেতে থাকে ততই শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এবং বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা আন্দোলনে অংশ নিতে থাকে।
লক্ষ্মীপুর শহর শিবিরের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আন্দোলন চললেও প্রত্যেকটি কর্মসূচিতে শিবিরের নেতাকর্মীরা সক্রিয় ছিল। দমন-পীড়ন উপেক্ষা করে আন্দোলন করতে হয়েছে। ওইসব দিন ছিল বছরের মতো। প্রতিদিন পুলিশের গ্রেফতারি পরোয়ানা এড়িয়ে আন্দোলনে যেতে হত। তারপরও ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করে ঘরে ফেরে শিক্ষার্থীরা।’