শিরোনাম
মোশতাক আহমদ
ঢাকা, ২০ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম বলেছেন, টিআর কাবিখায় অনুরোধের বিশেষ বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়েছে। অপচয় রোধে গত বছর টিআর, কাবিখার ২ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে কাবিখার ১ হাজার ৫০ কোটি টাকা আর টিআর খাতের ১ হাজার ১১২ কোটি টাকা।
আজ বুধবার সচিবালয়ে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসস’কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, ২০২৪ সালের ৮ আগস্ট যখন আমরা শপথ গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসি, ততক্ষণে অর্থবছরের প্রায় তিন মাস চলে গেছে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, ওই সময় আমি টিআর (গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচি) এবং কাবিখার (গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি) প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে সারাদেশে প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। তাদের তথ্য মতে জানতে পারলাম এই মুহূর্তে প্রজেক্ট দিয়ে বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করা যাবে না। সেজন্য টাকাগুলো সরকারকে ফেরত দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ অবকাঠামো সংরক্ষণ কর্মসূচি-টিআর এবং কাবিখার বিশেষ বরাদ্দ সংকুচিত করায় দুর্নীতি ও অপচয় কমেছে এবং বরাদ্দে আঞ্চলিক সমতা আনয়ন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ভুয়া প্রকল্প বা একই প্রকল্প দিয়ে বার বার যেন গ্রামীণ পর্যায়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করতে না পারে, সেজন্য ২০২৪ সালের ৮ আগস্টের পর প্রতিটি উপজেলার প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) কে গণহারে এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় বদলি করা হয়েছে। একইসাথে নতুনভাবে পদায়ন হওয়া পিআইওদের কাছে তার উপজেলার আগের পিআইওদের সমস্ত প্রকল্পের তালিকা নেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা মন্ত্রণালয় ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ডাটাবেজে সংরক্ষিত করে রাখা হয়েছে। এর ফলে এখন থেকে কেউ আর একই প্রকল্প বার বার দেখিয়ে টাকা বরাদ্দ নিতে পারবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, ধরুন, গ্রামের দরিদ্র ১০ জন মানুষকে ১০ দিনের জন্য দৈনিক ৫০০ টাকা করে মজুরিতে মাটি ভরাট বা নালা খননের কাজ দেওয়া হলো। সেখানে খোঁজ নিয়ে দেখা যাবে, স্থানীয় কোনো প্রভাবশালী নেতা সেই গরিব ১০ জনের ১০ দিনের কাজ মেশিন (ভেকু) দিয়ে আধা ঘণ্টায় নালা খনন করে ফেলল। তাহলে যেই গরিবদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হলো, তারা তো আর টাকাটা পেল না। তবে সেখানেও দেখা যায়, গরিবদের ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে হয়তো তাদেরকে উপস্থিত দেখিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়। বিপরীতে গরিবরা পেল মাত্র ১০০ টাকা। অর্থাৎ যেখানে একজন গরিব মানুষ ১০ দিন কাজ করে ৫ হাজার টাকা পেত, আইডি কার্ড নিয়ে তাকে একশত টাকা ধরিয়ে দেওয়া হলো।
উপদেষ্টা বলেন, অনেকের ধারণা, টিআর-কাবিখা দিয়ে গ্রামীণ সমাজে অর্থনীতির পরিসঞ্চালন ঘটে। কিন্তু বর্তমান অবস্থা হলো এতক্ষণ আমি যা বললাম। অর্থাৎ গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের কর্মসংস্থানের পরিবর্তে এখন হচ্ছে ধনীদের আরো ধনী হওয়া। এই সব প্রকল্পের টাকায় হয়তো ইউএনও, পিআইও, ইউপি চেয়ারম্যান বা সংশ্লিষ্ট অন্য কোন নেতার পকেট ভারী হচ্ছে। গরীব লোক গরীবই থেকে যাচ্ছে।
ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, আগে যেভাবে মন্ত্রণালয় থেকে যেভাবে ঢেউটিন, কম্বল ও শুকনো খাবার ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে একসঙ্গে কেনার পরে সারাদেশে দেওয়া হতো, এখন আর মন্ত্রণালয় থেকে সেভাবে দেওয়া হয় না।
ত্রাণ উপদেষ্টা বলেন, ঢেউটিন, শুকনা খাবার ও কম্বল ক্রয় বিকেন্দ্রীকরণ করে দেওয়া হয়েছে। এতে করে কেন্দ্রীয় গুদামে সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যয় হ্রাস পেয়েছে, সময় সাশ্রয় হয়েছে, বিতরণে গতি বেড়েছে এবং তাৎক্ষণিক বিতরণ করা সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, উপকারভোগী বাছাই এর ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব, স্বজনপ্রীতি ও দ্বৈততা পরিহার করা হয়েছে এবং পুরনো তালিকার বদলে নতুন তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, প্রাকৃতিক, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত এবং মনুষ্যসৃষ্ট নানা দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য সহনীয় পর্যায়ে কমিয়ে আনার ভিশন নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কাজ করে থাকে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, সেই ভিশন বাস্তবায়নে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সার্বিক সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমে জনগণ বিশেষ করে দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠির দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম একটি দক্ষ জরুরী সাড়া প্রদান পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করছে এই মন্ত্রণালয়।
উপদেষ্টা বলেন, এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে উল্লেখযোগ্য দপ্তর সংস্থা হলো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আআরআরসি) কার্যালয়।
তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের অধীনে উপজেলা পর্যায়ে কর্মরত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নতুন কর্মস্থলে চলে যাওয়ার পূর্বে তার কর্মকালে কী-কী প্রকল্প গৃহীত হয়েছে সেই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রদান করে যাওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে করে ভবিষ্যতে প্রকল্প গ্রহণে দ্বৈততা পরিহার করা সম্ভব হয়।
উপদেষ্টা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইন্টার্নশিপ করার বিষয়ে মন্ত্রণালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অফ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এন্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ এর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
ফারুক-ই-আজম বলেন, দুর্যোগকালীন সময়ে আমরা চেষ্টা করছি যাতে বিভিন্ন বাহিনীর প্রশিক্ষিতদেরকে উদ্ধার কাজে পাঠানো যায়। এজন্য ফায়ার সার্ভিস এবং আনসার বিডিআরসহ সব বাহিনীতে দুর্যোগের জন্য স্পেশাল টিম তৈরির জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আগাম সর্তকতা জানার কারণে ঘূর্ণিঝড় বন্যা ও জলোচ্ছ্বাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
ফারুক-ই- আজম বলেন, যদিও ভূমিকম্পের এখনো আগাম কোন সতর্কতা জারি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আগামীতে এ বিষয়ে প্রযুক্তি ডেভলপমেন্টের চেষ্টা করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, গত অর্থবছরে ইজিপিপির পাশাপাশি একই সময়ে চলমান অন্যান্য প্রকল্প পরিবীক্ষণ এর স্বার্থে ও ইজিপিপি প্রকল্পের উপকারভোগীর হালনাগাদ তালিকা সম্পন্ন না হওয়ায় এই প্রকল্পে বরাদ্দ বন্ধ রাখা হয়।
তিনি বলেন, ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প-এর আওতায় ১৭৬ কোটি টাকার ১১টি এরিয়াল প্ল্যাটফর্ম ল্যাডার ক্রয়পূর্বক ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এছাড়া, ভূমিকম্প ও অন্যানা দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা, এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প-এর আওতায় উপকূলবর্তী অঞ্চলে সাইক্লোনে উদ্ধার কাজে ব্যবহারের জন্য সিপিপি-এর অধীনে পরিচালিত প্রশিক্ষিত ৮০ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে ৬১ দশমিক ৫ কোটি টাকার ১৩ ধরণের আইটেম সরবরাহ করা হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, মন্ত্রণালয়ের সব কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও যথাযথ পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ‘সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সিস্টেম উন্নয়ন’ শীর্ষক সফটওয়্যার তৈরীর প্রকল্পের টিপিপি পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি জানান, বন্যা প্রবণ ও নদী ভাঙন এলাকায় বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের অধীনে এই অর্থবছরে (২০২৫-২৬) ৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ সম্পন্ন করা হবে।
তিনি বলেন, গ্রামীণ রাস্তায় ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত সেতু/কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে ১ হাজার ১০০টি ব্রিজ নির্মাণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
এছাড়া, গ্রামীণ মাটির রাস্তাসমূহ টেকসই করণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ১৪৩টি দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে।
উপদেষ্টা জানান, জাইকার অর্থায়নে গৃহীত ‘ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এন্ড এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট (কম্পেনেন্ট ২ এন্ড কম্পেনেন্ট ৩)।
প্রকল্পের অধীনে ৫৫টি উদ্ধার নৌকা ক্রয়, ২০টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ, ২০ কি. মি. প্যালাসাইডিং বাস্তবায়ন এবং ৩২ কি. মি. রাস্তা এইচবি বিকরণের কার্যক্রম চলমান আছে।
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দপ্তর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ‘ভূমিকম্প ও অন্যান্য দুর্যোগকালে অনুসন্ধান, উদ্ধার অভিযান পরিচালনা এবং জরুরি যোগাযোগের জন্য যন্ত্রপাতি সংগ্রহ প্রকল্প’ প্রকল্পের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে ৩৪০ কোটি টাকার উদ্ধার যন্ত্রপাতি, বাংলাদেশ পুলিশকে ৬৯ দশমিক ৩৪ কোটি টাকার উদ্ধার যন্ত্রপাতি এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরকে ৫৯ কোটি টাকার উদ্ধারকারী নৌকা ক্রয়পূর্বক সরবরাহ করা হবে।
তিনি বলেন, চলতি বছরের শেষের দিকে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট নির্মাণ (১ম পর্যায়) শীর্ষক প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
উপদেষ্টা বলেন,বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে অংশীদারমূলক কার্যক্রমের আওতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স বা মাস্টার্স কোর্সের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং একাডেমিয়ার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির বিষয় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় দুর্যোগে জরুরি সাড়াদান কার্যক্রমকে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় করার জন্য চীন সরকারের অনুদানে ঢাকার সাত রাস্তায় সিএসডি গুদাম অঞ্চলে ন্যাশনাল ইমাজের্ন্সি অপাররেশন সেন্টার (এনইওসি) নির্মাণ ও চীন সরকারের সঙ্গে উক্ত বিষয়ে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের পরিধি সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা জানান, নগর দুর্যোগ যেমন ভূমিকম্প’র ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে দেশব্যাপী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন ও প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও জাইকার ঋণে চলমান দু’টি প্রকল্পের আওতায় যথাক্রমে ৩৭০টি ও ৪৩টি উদ্ধারকারী স্পিডবোট ক্রয়ের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধারকাজে উক্ত স্পিডবোট ব্যবহারে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা থাকায় শুধুমাত্র উপকূলবর্তী এলাকার জন্য জাইকার অর্থায়নে এ্যাম্বুলেন্স সুবিধাসহ ১২টি স্পিডবোট ক্রয় করা যেতে পারে। প্রকল্পে ধার্য্যকৃত বাকি স্পিডবোটের পরিবর্তে স্থানীয় পর্যায়ে তৈরী দেশী নৌকা ক্রয়ের বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।
উপদেষ্টা বলেন, ন্যাশনাল এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার-এর নির্মাণস্থলের জায়গা ও চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলাপমেন্ট কো-অপারেশন এজেন্সি (সিডকা) চাহিত অতিরিক্ত জায়গা নিয়ে জটিলতা রয়েছে।
চট্টগ্রাম ও সিলেটে দু’টি আঞ্চলিক ন্যাশনাল এমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার কাম গুদাম এবং ঢাকায় বিমানবন্দরের নিকটবর্তী কোন স্থানে আধুনিক ত্রাণ গুদাম নির্মাণে অর্থ সাহায্য প্রাপ্তির বিষয়ে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে চীন সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে অর্থায়নের বিষয়টি সুগম হতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, দুর্যোগকালীন সময়ে জরুরি সাড়াদান ও উদ্ধার কার্যক্রম ব্যবস্থাপনায় মূল সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করে থাকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। উক্ত ব্যবস্থাপনায় আগাম সতর্কতা প্রস্তুত ও উদ্ধার কার্যক্রমে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা কিছু দপ্তর যেমন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর, বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সহযোগিতা করে যাদের মূল কাজ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট।
তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধি ও এসব দপ্তর সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কার্যপরিধি ভিন্ন হওয়ায় এসব দপ্তরের সঙ্গে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি ও জটিলতা তৈরী হয় যে কারণে উক্ত দপ্তরসমূহকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে আসা অধিকতর সমীচীন হবে বলে আমরা মনে করছি।
ইজিপিপি’র আওতায় উপকারভোগীর মজুরি পরিশোধের ক্ষেত্রে ব্যাংক একাউন্ট বা মোবাইল ফাইনান্সিয়াল সার্ভিস এর ব্যবহার।
উপদেষ্টা জানান, এই মন্ত্রণালয়ের অধীনে চলমান নানা প্রকল্পে কিছু অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম আছে যেমন, রাস্তা নির্মাণ, ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ। এসব অবকাঠামো নির্মাণ কার্যক্রম সরকারের প্রকৌশল সংক্রান্ত বিভাগ বা দপ্তরে সংশ্লিষ্ট হওয়ায় ভবিষ্যতে এসব কার্যক্রম মন্ত্রণালয়ের অধীনে না রাখাই সমীচীন হবে। এ বিষয়ে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।