শিরোনাম

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চিপের বাজারে নিজেদের আধিপত্য আরও শক্তিশালী করতে সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ ‘গ্রোক’-এর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছে টেক জায়ান্ট এনভিডিয়া।
বুধবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রোক জানিয়েছে, তাদের শীর্ষ নির্বাহীদের বিদায় একটি নন-এক্সক্লুসিভ লাইসেন্সিং চুক্তির অংশ। এ চুক্তির মাধ্যমে এনভিডিয়া গ্রোকের ইনফারেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করবে। মূলত কম খরচে এআই প্রসেসিংয়ের সুযোগ বাড়াতে কাজ করছে এই দুই কোম্পানি।
চুক্তি অনুযায়ী, গ্রোক-এর প্রতিষ্ঠাতা জোনাথন রস এবং প্রেসিডেন্ট সানি মাদরাসহ টিমের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা এনভিডিয়ায় যোগ দিচ্ছেন। তারা সেখানে গ্রোক-এর প্রযুক্তিকে আরও উন্নত ও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে কাজ করবেন।
সান ফ্রান্সিসকো থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
এনভিডিয়া এআই ট্রেনিং চিপ বাজারে আধিপত্য বিস্তার করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। তবে এটি ইনফারেন্স সেগমেন্টে গ্রোকের মতো বিশেষায়িত স্টার্টআপগুলোর প্রতিযোগিতার মুখে পড়ছে।
এআই ইনফারেন্স হলো, আগে থেকে প্রশিক্ষিত মডেল ব্যবহার করে কোনো উত্তর তৈরি করা।
ধরা যাক— আপনি চ্যাটজিপিটিকে কোনো প্রশ্ন করলেন, আর সে সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল অথবা কোনো ছবি দেখে কম্পিউটার বলল, সেখানে একটি গাছ বা গাড়ি আছে। এই উত্তর দেওয়ার বা বস্তু শনাক্ত করার পুরো প্রক্রিয়াটিই হলো ‘এআই ইনফারেন্স’।
গ্রোক জানিয়েছে, তারা নতুন প্রধান নির্বাহী সাইমন এডওয়ার্ডসের নেতৃত্বে একটি স্বাধীন কোম্পানি হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।
বিবৃতিটি আসার কিছুক্ষণ আগে সিএনবিসি এক প্রতিবেদনে জানায় যে এনভিডিয়া ২০ বিলিয়ন ডলারে গ্রোক-কে কিনে নিচ্ছে।
তবে এএফপির ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, কোম্পানি বিক্রির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
এই পুরো বিষয়টি সিলিকন ভ্যালিতে জনপ্রিয় ‘একুইহায়ার’ পদ্ধতির মতো।
এই পদ্ধতিতে বড় কোম্পানিগুলো ছোট প্রতিষ্ঠানের মেধাবী কর্মীদের নিজেদের দলে টেনে নেয়, কিন্তু কোম্পানিটি বিলুপ্ত হয় না।
মূলত ছোট ও সম্ভাবনাময় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিকে সরাসরি কিনে নিলে নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারিতে পড়ার ভয় থাকে।
সেই আইনি জটিলতা এড়াতেই এই কৌশলী পথ বেছে নেয় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো।
এর আগে, ২০২৪ সালে মাইক্রোসফট একই কায়দায় এআই স্টার্টআপ ‘ইনফ্লেকশন এআই’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মোস্তফা সুলেইমানসহ মূল টিমকে নিজেদের করে নিয়েছিল।
গুগলও গত বছর ‘ক্যারাক্টার এআই’-এর কর্মীদের একইভাবে নিয়োগ দেয়। মেটাও ২০২৫ সালে ১৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে ‘স্কেল এআই’র প্রধান নির্বাহী আলেকজান্ডার ওয়াংকে তাদের নতুন ল্যাবের দায়িত্ব দিয়েছে।
এনভিডিয়ার এই পদক্ষেপকেও তেমনি এক বড় ‘একুইহায়ার’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।