শিরোনাম

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সুদানের প্রধানমন্ত্রী কামিল ইদ্রিস শনিবার নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। সেখানে তিনি জাতিসংঘ মহাসচিবসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানো ও সম্ভাব্য যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছে সরকারের দুটি সূত্র।
সুদানের রাজধানী পোর্ট সুদান থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
এই সফর এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদানের সেনাবাহিনী ও র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-এর মধ্যে চলমান লড়াই দক্ষিণ করদোফানে আরও তীব্রতর হয়েছে। এতে গত অক্টোবরের শেষ দিকে আল-ফাশের শহরে সংঘটিত নৃশংসতার মতো নতুন সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে সেনাবাহিনীর শেষ শক্ত ঘাঁটি দখলের পর আরএসএফের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অপহরণের অভিযোগ উঠে আসে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সুদানি সরকারি সূত্র এএফপিকে জানান, সুদানের ক্রমাবনত মানবিক সংকটের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ইদ্রিস জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবদেল কাদেরও এএফপিকে জানান, আলোচনায় ‘মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকার সহজকরণ’ এবং জাতিসংঘের কাছে হস্তান্তর করা সরকারের একটি রোডম্যাপের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করা হবে। ওই রোডম্যাপে আরএসএফ দখলকৃত এলাকা ও শহরগুলো থেকে সরে গেলে তার সঙ্গে যুক্ত একটি ‘শর্তসাপেক্ষ যুদ্ধবিরতি’র কথাও রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুতে গুতেরেস জানান, জাতিসংঘ উভয় পক্ষকে নিয়ে জেনেভায় আলোচনার প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ উল্লেখ করেননি।
গত মাসে কূটনৈতিক তৎপরতার নতুন আশার সঞ্চার হয়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবের যুবরাজ ও কার্যত শাসক প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের অনুরোধে সংঘাত অবসানে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
সুদানের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান গত সপ্তাহে বলেন, রিয়াদে প্রিন্স মোহাম্মদের সঙ্গে আলোচনার পর তিনি এই সংকট সমাধানে ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসরকে নিয়ে গঠিত চার দেশের মধ্যস্থতাকারী গোষ্ঠীর অংশ, যারা সাম্প্রতিক মাসগুলোতে কূটনৈতিক উদ্যোগ জোরদার করেছে।
তবে বুরহান মধ্যস্থতাকারীদের বিরুদ্ধে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলার পর আলোচনা স্থবির হয়ে পড়ে।
সেনাবাহিনী-সমর্থিত সুদানি সরকার আবুধাবির বিরুদ্ধে আরএসএফকে অস্ত্র ও সহায়তা দেওয়ার অভিযোগ করেছে, যা আমিরাত বারবার অস্বীকার করেছে।
আরএসএফ বলেছে, তারা আন্তর্জাতিক যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনাকে সমর্থন করে; তবে করদোফানসহ বিভিন্ন এলাকায় তীব্র লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
সুদানের সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ মিত্র মিসর বৃহস্পতিবার সতর্ক করে জানায়, সহিংসতার এই বৃদ্ধি ‘মিসরের জাতীয় নিরাপত্তাকে সরাসরি প্রভাবিত করে’ এবং সুদানি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করা একটি ‘লাল রেখা’ বলে উল্লেখ করে।