বাসস
  ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯:০৬

উপহার কেলেঙ্কারি মামলায় ইমরান খানকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড

ঢাকা, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : উপহার সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় পাকিস্তানের একটি আদালত আজ শনিবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। ক্ষমতায় থাকাকালে পাওয়া উপহার নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে তাদের এ সাজা দেওয়া হয়।

ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

এই রায় ইমরান খানের জন্য সর্বশেষ আইনি ধাক্কা। ২০২২ সালে তার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে ইমরান খান একের পর এক মামলার সম্মুখীন হচ্ছেন।

২০২৩ সাল থেকে কারাবন্দি থাকা ইমরান খান বরাবরই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন এবং এসব মামলাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে দাবি করেছেন।

রায়ে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ১০ বছর এবং দুর্নীতির অভিযোগে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলাটিতে রাষ্ট্রীয় উপহারের মূল্য কম দেখানোর অভিযোগ আনা হয়।

পাকিস্তানের আইনে সরকারি কর্মকর্তাদের সব উপহার সম্পর্কে ঘোষণা দিতে হয়। তবে, নির্দিষ্ট মূল্যের নিচে থাকা উপহার তারা নিজেদের কাছে রাখতে পারেন অথবা ছাড়মূল্যে তা কিনে নিতে পারেন।

সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ২০২১ সালের মে মাসে ইমরান খান ও তার স্ত্রীকে দেওয়া উপহারের মূল্য কম দেখানোর অভিযোগের মামলায় শনিবার এ রায় দেওয়া হয়। 

এর আগে আরেকটি মামলায় যুবরাজ মোহাম্মদের উপহার দেওয়া বিলাসবহুল ঘড়ির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভিযোগে ইমরান খানকে ১৪ বছর এবং বুশরা বিবিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দাবি করেছে, একটি প্রহসনের আদালতের দেওয়া এই সর্বশেষ সাজা ইমরান খানকে অবৈধ ও অন্যায্যভাবে কারাবাস দীর্ঘায়িত করার জন্যই দেওয়া হয়েছে।

পোস্টে আরো বলা হয়, সারা বিশ্ব জানে, এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

দলের মুখপাত্র সৈয়দ জুলফিকার বুখারি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এ রায় ন্যায়বিচারের মৌলিক নীতিকে উপেক্ষা করেছে।’

তিনি আরও বলেন, কোনো উদ্দেশ্য, লাভ বা ক্ষতির কোনো প্রমাণ ছাড়াই অপরাধমূলক দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং নিয়মের পশ্চাদমুখী ব্যাখ্যার ওপর নির্ভর করা হয়েছে।

এদিকে, কারাগারে ইমরান খানের অবস্থার বিষয়ে আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা বাড়িয়েছে তার পরিবার।

সম্প্রতি স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইমরান খানের ছেলে কাসিম খান বলেছেন, তার বাবাকে ‘সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন  অবস্থায় রাখা হয়েছে’ এবং এমনকি কারারক্ষীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘এগুলো সবই মানসিক নির্যাতনের কৌশল। পরিবারের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই, ব্যক্তিগত চিকিৎসকের সঙ্গেও কোনো যোগাযোগ নেই। এসব কৌশল ব্যবহার করে তাকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হচ্ছে।’

পাকিস্তান সরকার বারবার এ ধরনের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে আসছে।