শিরোনাম

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত এই সপ্তাহের শেষে বার্লিনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হোয়াইট হাউস এ তথ্য জানিয়েছে।
কিয়েভ থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
গত মাসে একটি শান্তি পরিকল্পনা প্রকাশের পর থেকেই কিয়েভের ওপর সমঝোতায় পৌঁছানোর চাপ বাড়িয়ে চলেছেন ট্রাম্প। তবে, তা নিয়ে সমালোচনা উঠেছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, এতে মস্কোর মূল দাবিগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ ভূখণ্ড ছাড়তে বলার বিষয়টিও অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
২৮-দফার এই প্রস্তাব ঘিরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে কূটনৈতিক তৎপরতা বেড়েছে। সম্প্রতি কিয়েভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ওয়াশিংটনে একটি হালনাগাদ করা পরিকল্পনা পাঠিয়েছেন।
সম্প্রতি ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ শান্তি আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে এই সপ্তাহের শেষে জেলেনস্কি এবং ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা প্রতিবেদনটিকে সঠিক বলে শুক্রবার এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন।
জার্মান সরকার জানায়, আগামী সোমবার বার্লিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। এর আগে জেলেনস্কি জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসের সঙ্গে একটি জার্মান-ইউক্রেন ব্যবসায়িক ফোরামে যোগ দেবেন।
সর্বশেষ মার্কিন পরিকল্পনায় ইউক্রেনের দ্রুত ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদানের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে, মস্কো এর বিরোধিতা করছে।
ইউরোপীয় ও ইউক্রেনীয় নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা নিশ্চয়তা চাইছেন। ফরাসি প্রেসিডেন্সি শুক্রবার জানিয়েছে, ভূখণ্ড নিয়ে কোনো ছাড় দেওয়ার আগে এসব নিশ্চয়তা প্রয়োজন।
ন্যাটোতে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত আলিয়োনা গেটমানচুক বৃহস্পতিবার এএফপিকে জানান, ইউক্রেনের জন্য সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা গ্যারান্টি যেকোনো শান্তি চুক্তির জন্য একটি ‘পূর্বশর্ত’ এবং এটি অবশ্যই একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক নথিতে থাকতে হবে।
সর্বশেষ মার্কিন পরিকল্পনায় বলা হয়, ইউক্রেন ২০২৭ সালের জানুয়ারিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে পারে। তবে ইইউতে যোগ দিতে দীর্ঘ প্রক্রিয়া পেরোতে হয় এবং ২৭ সদস্য রাষ্ট্রের সর্বসম্মত ভোট প্রয়োজন। হাঙ্গেরিসহ কয়েকটি দেশ ইউক্রেনের সদস্যপদ প্রদানে আপত্তি জানিয়ে আসছে।
বার্লিন জানায়, জেলেনস্কি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো নেতাদের সঙ্গে শান্তি আলোচনার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করবেন।
এদিকে, রাশিয়া শুক্রবার জানায়, মার্কিন পরিকল্পনায় সংশোধন নিয়ে তারা সন্দিহান। ক্রেমলিনের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ বলেন, ‘আমাদের মনে হচ্ছে এই সংস্করণ আরও খারাপ হবে।’
জেলেনস্কি বৃহস্পতিবার বলেন, ওয়াশিংটন শুধু ইউক্রেনকেই সেনা প্রত্যাহারের কথা বলছে, রাশিয়াকে নয়। পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কে একটি ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ তৈরি করে দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে বাফার জোন গড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর এক উপদেষ্টা জানান, কিয়েভ ভূখণ্ড ছাড় বা বাফার জোন নিয়ে কোনো চুক্তির কথা বিবেচনা করছে না।
রাশিয়া জনবল ও অস্ত্রে এগিয়ে রয়েছে। কয়েক মাস ধরে তারা যুদ্ধক্ষেত্রে অগ্রসর হচ্ছে। নভেম্বর মাসে তারা গত এক বছরের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে।