বাসস
  ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৪০

পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপন ২০১৭ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে: জাতিসংঘ

ঢাকা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপন ২০১৭ সাল থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। এটি জাতিসংঘের এ ধরনের তথ্য সংগ্রহ শুরু করার পর থেকে সর্বোচ্চ বসতি স্থাপনের ঘটনা। 

শুক্রবার বার্তা সংস্থা এএফপি-তে প্রকাশিত জাতিসংঘ প্রধানের একটি প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে ‘প্রায় ৪৭ হাজার ৩শ’ ৯০টি আবাসন ইউনিটের অনুমোদন বা দরপত্র আহ্বান করা হয়, যেখানে ২০২৪ সালে এই সংখ্যা ছিল প্রায় ২৬ হাজার একশ ৭০টি। 

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বসতি স্থাপন সম্প্রসারণের নিন্দা জানিয়ে বলেন, এই পরিস্থিতি ‘ক্রমাগত উত্তেজনা বাড়াচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমিতে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করছে এবং একটি সম্পূর্ণ স্বাধীন, গণতান্ত্রিক, সংযুক্ত ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বাস্তবতাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, এই পরিসংখ্যানগুলো আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বসতি বৃদ্ধিরই সত্যতাই তুলে ধরছে।

খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস উল্লেখ করেন যে ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বছরে গড়ে ১২ হাজার ৮শ ১৫টি আবাসন ইউনিট যুক্ত হয়েছে।

পূর্ব জেরুজালেম বাদে ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরাইল কর্তৃক অধিকৃত পশ্চিম তীরে প্রায় ৫ লাখ ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারী বাস করছে, পাশাপাশি সেখানে প্রায় ৩০ লাখ ফিলিস্তিনি বাসিন্দা রয়েছে।

গুতেরেস বলেন, ‘এই বসতি স্থাপন ও নির্মাণকাজ অবৈধ ইসরাইলি দখলদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করছে, আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারকে খর্ব করছে।’

তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরে ‘সহিংসতা ও উত্তেজনার অব্যাহত বৃদ্ধিরও’ নিন্দা জানান।  

জাতিসংঘ মহাসচিব পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর অভিযান ও উত্তেজনা বৃদ্ধি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এই অভিযানগুলোতে বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, সেখানকার বাসিন্দারা বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং তাদের ঘরবাড়ি ও অন্যান্য অবকাঠামোগুলোকে ধ্বংস হয়েছে। 

২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে হামাসের ইসরাইল আক্রমণের পর গাজা যুদ্ধ শুরু হলে, পশ্চিম তীরে সহিংসতা তীব্রভাবে বেড়ে যায়।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের ভিত্তিতে এএফপি’র হিসাব অনুযায়ী, সংঘাত শুরুর পর থেকে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি সেনা বা বসতি স্থাপনকারীদের হাতে অন্তত এক হাজার ২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যাদের মধ্যে যোদ্ধা ও বেসামরিক উভয়ই রয়েছে।

ইসরাইলি তথ্য অনুসারে জানা গেছে, একই সময়ে ফিলিস্তিনিদের আক্রমণ বা ইসরাইলি সামরিক অভিযানে পশ্চিম তীরে কমপক্ষে ৪৪ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।