শিরোনাম

ঢাকা, ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস): মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় দেশের ওপরই ‘চরম হতাশ’ বলে বৃহস্পতিবার তার মুখপাত্র জানিয়েছেন।
এর আগে কিয়েভ বলেছে, প্রায় চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে, ওয়াশিংটন এখনও ইউক্রেনকে ভূখণ্ডের একটি বড় অংশ ছেড়ে দিতে চাপ দিচ্ছে।
কিয়েভ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেন, প্রেসিডেন্ট এই যুদ্ধের উভয় পক্ষকে নিয়ে অত্যন্ত হতাশ। তিনি আর কোনো কথা নয়, পদক্ষেপ চান। তিনি চান এই যুদ্ধের অবসান হোক।
এর আগে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এমন মন্তব্য করেন যা ইঙ্গিত দেয়, মার্কিন পরিকল্পনা অনেকটা রাশিয়ার পক্ষে গেছে।
জেলেনস্কি বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মস্কোর আগ্রাসনের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে ওয়াশিংটন এখনও ইউক্রেনকে রাশিয়ার কাছে ভূমি ছাড়তে চাপ দিচ্ছে।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ওয়াশিংটন চায় শুধু ইউক্রেনই পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক অঞ্চলের কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহার করুক। সেখানে দুই সেনাবাহিনীর মধ্যে বাফার হিসেবে একটি নিরস্ত্রীকৃত ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করা হবে। তবে, রাশিয়ার ক্ষেত্রে এমন কোনো প্রত্যাহারের কথা বলা হয়নি।
সর্বশেষ মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়া দক্ষিণাঞ্চলে তার অবস্থান বজায় রাখবে। তবে উত্তরে যে সব অঞ্চল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আনুষ্ঠানিকভাবে সংযুক্ত করার দাবি করেননি, সেই সব এলাকা থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করবে।
ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের মূল প্রস্তাবটি সংশোধন করছে এবং এই সপ্তাহে ওয়াশিংটনকে ২০ দফা পাল্টা প্রস্তাব পাঠিয়েছে, যার পূর্ণ বিবরণ এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
এক ব্রিফিংয়ে জেলেনস্কি বলেন, আমাদের দুটি মূল মতপার্থক্য রয়েছে: দোনেৎস্কের ভূখণ্ড ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত সব কিছু এবং দক্ষিণে জাপোরিঝঝিয়া পারমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। এই দুটি বিষয় নিয়েই আলোচনা চলছে।
মার্কিন পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা চায় ইউক্রেনীয় বাহিনী যেন দোনেৎস্ক অঞ্চল থেকে সরে যায়, আর সম্ভাব্য সমঝোতা হলো, রুশ বাহিনী এই অঞ্চলে প্রবেশ করবে না। অঞ্চলটিকে তারা ইতোমধ্যেই ‘মুক্ত অর্থনৈতিক অঞ্চল’ বলছে।
জেলেনস্কি বহুদিন ধরে বলে আসছেন, ইউক্রেনের ভূমি ছাড়ার কোনো ‘সাংবিধানিক’ বা ‘নৈতিক’ অধিকার তার নেই।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের জনগণের পক্ষ থেকে আসা উচিত।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বা গণভোট যেভাবেই হোক, ইউক্রেনের জনগণের অবস্থান থাকতে হবে।
মার্কিন পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাশিয়া খারকিভ, সুমি ও দিনপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলে দখল করা ভূখণ্ড ছেড়ে দেবে। এ সব অঞ্চলের ওপর মস্কো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দাবি করেনি।
২০২২ সালে রাশিয়া দোনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল সংযুক্ত করার দাবি করে। তবে, এই সব অঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে ছিল না।
ইনস্টিটিউট ফর দ্য স্টাডি অব ওয়ার (আইএসডব্লিউ)-এর তথ্যে এএফপি’র বিশ্লেষণ অনুযায়ী, ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনও দোনেৎস্ক অঞ্চলের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ তাদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে।