বাসস
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০:৩০

স্থানীয় ক্লিনিক রক্ষায় সন্তান জন্মদানে ১ হাজার ইউরো বোনাস দিচ্ছে ফরাসি শহর

ঢাকা, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ফ্রান্সের একটি শহর আগামী বছর থেকে স্থানীয় মাতৃসদনে সন্তান জন্ম দিতে আগ্রহী গর্ভবতী মায়েদের ১ হাজার ইউরো প্রদানের ঘোষণা দিয়েছে। স্থানীয় ক্লিনিক যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে উদ্যোগটি কার্যকর হবে।

ফ্রান্স থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

ফ্রান্সে জন্মহার কমছে এবং গ্রামীণ হাসপাতালগুলো ক্রমশ তাদের মাতৃসদন বন্ধ করে দিচ্ছে।

ফ্রান্সের মধ্যাঞ্চলের সাঁ-আমাঁ-মনত্রোঁ শহরের হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগ খোলা রাখার জন্য বছরে আইনগতভাবে নির্ধারিত ৩০০ ডেলিভারির শর্ত পূরণ করতে পারছে না।

হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ বছর শেষে বিভাগটিতে মাত্র ২২৬টি ডেলিভারি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাতে কাউন্সিলররা পরিকল্পনাটি অনুমোদন করেছেন। গর্ভবতী নারীরা যদি বড় হাসপাতালে না গিয়ে গ্রামীণ মাতৃসদনে সন্তান জন্ম দিতে সম্মত হন, তাহলে তাদের প্রত্যেককে ১ হাজার ইউরো (১ হাজার ১৬০ মার্কিন ডলার) দেওয়া হবে।

ডানপন্থী মেয়র ইমানুয়েল রিওটে এএফপিকে বলেন, আমরা নারীদের সন্তান জন্ম দিতে টাকা দিচ্ছি না। আমরা সেই নারীদের অর্থ দিচ্ছি, যারা ইতিমধ্যেই গর্ভবতী এবং সাঁ-আমাঁ-মনত্রোঁ শহরে সন্তান জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

১০ হাজার বাসিন্দার এ শহরের মেয়র বলেন, মায়েদের প্রথমে প্রসব-পূর্ব পরীক্ষা করাতে আসতে হবে। তবে জটিল প্রসবগুলো বিশেষায়িত হাসপাতালে পাঠাতে হবে, যেমনটি কয়েক দশক ধরে করা হচ্ছে।

তবে কিছু চিকিৎসক এ ধারণার বিরোধিতা করছেন। অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট, প্রসূতিবিদ এবং জরুরি চিকিৎসকদের প্রতিনিধিত্বকারী চারটি চিকিৎসক ইউনিয়ন সতর্ক করে বলেছে, রোগীরা যেন কেবল আর্থিক ক্ষতিপূরণের ভিত্তিতে সন্তান জন্মদানের স্থান নির্বাচন না করেন। কারণ জটিলতার ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে।

তারা এ সপ্তাহে এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, যখন কোনো মাতৃসদন বন্ধ হওয়ার হুমকির মুখে পড়ে, তা অর্থনৈতিক কারণে নয় বরং নিরাপত্তার কারণে।

জাতীয় অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট ইউনিয়নের সদস্য অ্যান ওয়েরনেট এএফপিকে বলেন, গ্রামীণ মাতৃসদনগুলোতে প্রায়ই যোগ্য কর্মী পেতে সমস্যা হয়। তাই মায়েদের ও নবজাতকের স্বার্থে সেগুলো বন্ধ হওয়া উচিত।

গত এক দশকে দেশটিতে মাতৃসদনের সংখ্যা প্রায় পাঁচ ভাগ কমে গেছে। ২০২৩ সালে তা ৪৫৭ এ দাঁড়িয়েছে।

চলতি বছরের শুরুর দিকে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ গ্রামীণ প্রসূতি ক্লিনিক বন্ধ বন্ধে একটি বিল অনুমোদন করেছে। তবে সিনেট এখনও তা পর্যালোচনা করেনি।

ইউরোপীয় ইউনিয়নজুড়ে, ফ্রান্সসহ, জন্মহার হ্রাস পাচ্ছে। তবে ইইউ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ফ্রান্সে নারীরা গড়ে ১.৬ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। বুলগেরিয়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জন্মহার।