শিরোনাম

ঢাকা, ৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার সরকারের বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে তুরস্ক। শুক্রবার দেশটি এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
এ ঘটনার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরাইল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা'আর বলেন, ইসরাইল 'ঘৃণা ও তীব্র অবজ্ঞার সঙ্গে' সম্পূর্ণভাবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করছে। তিনি তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির ঘটনাকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের 'রাজনৈতিক প্রচার কৌশল' বলে আখ্যা দিয়েছেন।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
ইস্তাম্বুল প্রসিকিউটর কার্যালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, মোট ৩৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, তবে তাদের পুরো তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানার তালিকায় রয়েছেন ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাৎজ, জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গভির এবং সেনাবাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আইয়াল জামির।
তুরস্কের অভিযোগ, ইসরাইলের এই কর্মকর্তারা গাজায় 'পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধে' জড়িত।
বিবৃতিতে গাজা উপত্যকায় তুরস্ক কর্তৃক নির্মিত এবং মার্চ মাসে ইসরাইল কর্তৃক বোমা হামলার শিকার ‘তুর্কি-ফিলিস্তিনি মৈত্রী হাসপাতাল’-এর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধের শুরু থেকেই তুরস্ক এর অন্যতম সমালোচক। গত বছর দেশটি দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে একযোগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অংশ নেয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ১০ অক্টোবর থেকে বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নাজুক এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।
হামাস তুরস্কের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ, যা ন্যায়, মানবতা ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শে বিশ্বাসী তুর্কি জনগণ ও তাদের নেতাদের আন্তরিক অবস্থানকে তুলে ধরে, যারা আমাদের নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি অবিচল সমর্থন জানিয়ে আসছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে ইসরাইলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিদিয়ন সা'আর বলেন, এরদোয়ানের তুরস্কে বিচার বিভাগ বহু আগেই রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী, সাংবাদিক, বিচারকদের দমন করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে।
ইসরাইলের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাভিগদর লিবারম্যান বলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানাই প্রমাণ করে কেন তুরস্কের গাজায় কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভূমিকা থাকা উচিত নয়।
ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধোত্তর গাজায় স্থিতিশীলতা বাহিনীতে যোগ দিতে চায় তুরস্ক। তবে ইসরাইলি নেতারা বারবার গাজায় আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীতে তুরস্কের অংশগ্রহণের বিরোধিতা প্রকাশ করেছেন।
ইসরাইল বিভিন্ন সময় জাতিসংঘ কমিশন, কয়েকটি এনজিওসহ কিছু দেশের গণহত্যার অভিযোগকে 'ভিত্তিহীন' ও 'ইহুদি-বিরোধী' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।