শিরোনাম

ঢাকা, ৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ফিলিপাইনে ভয়াবহ তাণ্ডবের পর শুক্রবার ভোরে ভিয়েতনামে আঘাত হেনেছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘কালমায়েগি’। ফিলিপাইনে ১৮৮ জনের প্রাণহানির পর এবার ভিয়েতনামে আরও পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
ভিয়েতনাম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
সপ্তাহজুড়ে ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির প্রভাবে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত ও বন্যার সৃষ্টি হয় । এতে গাড়ি, ট্রাক, এমনকি কনটেইনার পর্যন্ত ভেসে যায়। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে এটি ভিয়েতনামে প্রবেশ করে।
ভিয়েতনামের পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানায়, দেশটির জিয়া লাই প্রদেশে যখন ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে, তখন এর বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪৯ কিলোমিটার (৯২ মাইল)।
জিয়া লাই প্রদেশের ৪২ বছর বয়সী জেলে নগুয়েন ভ্যান ট্যাম বলেন, ‘আমার দোতলা বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই নিরাপদে আছি, কিন্তু ঘূর্ণিঝড়টি সত্যিই ভয়াবহ ছিল, অনেক গাছপালা ভেঙে পড়েছে।’
পরিবেশ মন্ত্রণালয় জানায়, জিয়া লাই ও প্রতিবেশী দাক লাক প্রদেশে পাঁচজন মারা গেছেন এবং ৫৭টি ঘর সম্পূর্ণরূপে ধসে পড়েছে।
মন্ত্রণালয় আরও জানায়, প্রায় ৩ হাজারেরও বেশি বাড়ির ছাদ উড়ে গেছে বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ১১টি নৌকা ও জাহাজ ডুবে গেছে।
জিয়া লাই-এর কুইনন সৈকতে এএফপি সাংবাদিকরা দেখেছেন, উদ্ধারকর্মী ও সৈন্যরা বাসিন্দাদের সঙ্গে মিলে উপুড়ে পড়া গাছপালা সরিয়ে নিচ্ছেন, ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কার করছেন এবং রাতে উড়ে যাওয়া টিনের ছালা সংগ্রহ করছেন।
সরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি মধ্যাঞ্চলে আঘাত হানার কারণে ১৬ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। তবে শুক্রবার সকালের মধ্যেই এক-তৃতীয়াংশ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সেবা পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি সকালে দুর্বল হয়ে স্থলভাগের ভেতরে প্রবেশ করলেও মধ্য উপকূলজুড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর।
ভিয়েতনাম পৃথিবীর অন্যতম সক্রিয় ঘূর্ণিঝড়প্রবণ অঞ্চল। সাধারণত প্রতি বছর প্রায় ১০টি ঘূর্ণিঝড় বা ঝড় এই দেশে আঘাত হানে। তবে কালমায়েগি ছিল ২০২৫ সালের ১৩তম ঘূর্ণিঝড়।
বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়গুলো আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। সমুদ্রের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে ঘূর্ণিঝড় দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করতে পারে। উষ্ণ বায়ুমণ্ডলে বেশি আর্দ্রতা থাকে, ফলে বৃষ্টিপাতও বেশি হয়।
বৃহস্পতিবার ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দেশটিতে ১৮৮ জনের প্রাণহানি হয়েছে। এখনও ১৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।