শিরোনাম

ঢাকা, ১ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সহিংস বিক্ষোভের মধ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছেন তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান। তবে ভোটের আগেই প্রধান বিরোধী দলের অনেক প্রার্থীকে কারাবন্দি বা নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
শনিবার নির্বাচন কমিশন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করে জানিয়েছে, হাসান ৯৭.৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন এবং জয় পেয়েছেন দেশের প্রতিটি আসনে।
দারুস সালাম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, শনিবারই দ্রুত একটি শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
প্রধান বিরোধী দল চাদেমা’র অভিযোগ, বুধবার নির্বাচনের দিন থেকে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে শত শত মানুষ নিহত হয়েছে।
২০২১ সালে প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির আকস্মিক মৃত্যুর পর ভাইস প্রেসিডেন্ট পদ থেকে রাষ্ট্রপ্রধান হন সামিয়া। বিশ্লেষকদের মতে, সেনাবাহিনীর একটি অংশ ও মাগুফুলির ঘনিষ্ঠদের বিরোধিতার মুখে নিজের অবস্থান পোক্ত করতেই এমন জয়ের পথে হাঁটেন তিনি।
মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, ভোটের আগে দেশজুড়ে ‘ভয়ের রাজত্ব’ কায়েম করেছিলেন হাসান। শেষ মুহূর্তে একের পর এক অপহরণের ঘটনাও ঘটেছে।
বিরোধী দল চাদেমাকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হয়নি। এমনকি দলটির প্রধানকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিচারের সম্মুখীন করা হয়েছে।
নির্বাচনের দিন দেশজুড়ে মোতায়েন ছিল বিপুল নিরাপত্তা বাহিনী। তবু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়নি।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে হাসানের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে, পুলিশ ও ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায়। পরে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং কারফিউ জারি করা হয়।
চাদেমার এক মুখপাত্র শুক্রবার এএফপিকে জানান, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘প্রায় ৭০০ জন’ নিহত হয়েছেন।
দারুস সালামের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও এক কূটনীতিকও এএফপিকে জানান, নিহতের সংখ্যা ‘শতাধিক’।
বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে এখনো কোনো বক্তব্য দেননি প্রেসিডেন্ট সামিয়া।
সরকার ‘অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে দেশজুড়ে ইন্টারনেট বন্ধ ও কঠোর কারফিউ জারি থাকায় তথ্য পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
বুধবার সকাল থেকে কোনো সংবাদমাধ্যম অনলাইনে আপডেট দিতে পারেনি। সাংবাদিকদেরও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তানজানিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন। তার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বিক্ষোভে প্রাণহানি ও আহত হওয়ার খবর নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।’
বিক্ষোভ দমনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্টের ছেলে আবদুল হালিম হাফিজ আমিরের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ বাড়ছে জনমনে।
কিছু এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এমন খবর পাওয়া গেলেও তা নিশ্চিত নয়। তবে বৃহস্পতিবার সেনাপ্রধান জ্যাকব মকুন্ডা প্রেসিডেন্ট হাসানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভকারীদের ‘অপরাধী’ বলে আখ্যা দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ থাবিত কোম্বো শুক্রবার আল জাজিরাকে বলেন, সরকারের কাছে নিহততের কোনো ‘সংখ্যা নেই’।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের কোন ঘটনা ঘটেনি। বিক্ষোভে কেউ নিহত হয়েছেন, এমন কোনো সংখ্যা আমাদের কাছে নেই।’