শিরোনাম

ঢাকা, ২৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে মিয়ানমারের আসন্ন জান্তা পরিচালিত নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের অনুমতি দেওয়া হবে। দেশটির নির্বাচন কর্তৃপক্ষ বুধবার জানিয়েছে।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স বলছে, ২০২১ সালে গৃহযুদ্ধের সূত্রপাতকারী অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের জান্তা সেন্সরশিপ ও ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে মিডিয়া জগতকে তছনছ করে দিয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
এসময় স্থানীয় সাংবাদিকেরা দমন-পীড়নের প্রধান শিকার হয়েছেন এবং বিদেশি গণমাধ্যম কর্মীরা দলবেঁধে দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। শুধু এএফপিই একমাত্র আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা হিসেবে দেশটিতে পূর্ণাঙ্গ কার্যালয় বজায় রেখেছে।
জান্তা সরকার ২৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া নির্বাচনকে শান্তির পথ হিসেবে প্রচার করছে। কিন্তু এই নির্বাচন বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বর্জন করা হবে এবং পর্যবেক্ষকেরা একে চলমান সামরিক শাসনকে আড়াল করার একটি কৌশল হিসেবে বাতিল করে দিয়েছেন।
তবে বিদ্রোহী-অধ্যুষিত ছিটমহলগুলোতে ভোট বয়কট করা হবে আর পর্যবেক্ষকরা এই নির্বাচনকে অব্যাহত সামরিক শাসন আড়াল করার একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন।
জান্তা নিয়ন্ত্রিত ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় সংবাদমাধ্যমকেই নির্বাচনে সংবাদ সংগ্রহ করার অনুমতি দেওয়া হবে।’
নির্বাচনটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জান্তা-পরিচালিত তথ্য মন্ত্রণালয় ‘যোগ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংস্থাগুলোকে যাচাই-বাছাই ও অনুমোদন দেবে’।
সামরিক অভ্যুত্থানের ফলে মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া দেশটিতে প্রবেশাধিকারের প্রক্রিয়াটি কী হবে এবং কোন কোন গণমাধ্যমকে অনুমোদন দেওয়া হবে—তা স্পষ্ট নয়।
মিয়ানমার দশকব্যাপী গণতান্ত্রের পথে হাঁটার সময়, দেশটির গণমাধ্যমে বিকশিত হয়েছিল, নতুন দেশীয় গণমাধ্যমের উত্থান ঘটে ও বিদেশী সাংবাদিকরা ছুটে এসেছিলেন।
কিন্তু সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে, এই গণমাধ্যমগুলোর অনেকগুলোই বন্ধ হয়ে গেছে।
কোন কোন সাংবাদিক বিদ্রোহী-অধিকৃত এলাকায় চলে গেছেন এবং অনেক সাংবাদিকই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ডে নির্বাসিত থেকে কাজ করছেন।
কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টসের তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে সাংবাদিকদের কারাগারে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয়দের দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের অবস্থান তৃতীয় স্থানে ছিল।
মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছে, গণতান্ত্রিক নেতা অং সান সু চিকে অভ্যুত্থানের সময় ক্ষমতাচ্যুত ও কারাদণ্ড দেওয়া এবং তার বহুল জনপ্রিয় ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি ভেঙে দেওয়ায় নির্বাচন আর বৈধতা পেতে পারে না।
নির্বাচনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো এএফপিকে জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ান নেশনস অ্যাসোসিয়েশন (আসিয়ান) এই ভোট পর্যবেক্ষণ করার জন্য নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠাবে না।