শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইরাসমাস কর্মসূচির প্রবর্তক সোফিয়া কোরাদি আর নেই। শনিবার ইতালির সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, রোমে ৯১ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ইউরোপজুড়ে লাখো তরুণ-তরুণী বিদেশে গিয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছেন।
রোম থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
গণমাধ্যমে তার পরিবার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করে জানায় সোফিয়া ছিলেন ‘বিপুল প্রাণশক্তি এবং জ্ঞান, আবেগ ও উদারতায় ভরপুর’ এক নারী।
‘মাম্মা ইরাসমাস’ নামে পরিচিত এই শিক্ষাবিদ রোমের ‘রোমা থ্রি ইউনিভার্সিটির’ অধ্যাপক ছিলেন। তিনি মাত্র বিশ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের মর্যাদাপূর্ণ ‘ফুলব্রাইট স্কলারশিপ’ লাভ করেন। এর মাধ্যমে তিনি নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
দেশে ফিরে সোফিয়া কোরাদির পরীক্ষার ফলাফল ইতালিতে স্বীকৃতি পায়নি। এই অভিজ্ঞতা তাকে ভাবতে বাধ্য করে— দেশের বাইরে পড়াশোনা করে ফিরলে কেন তা স্বীকৃতি পাবে না? সেখান থেকেই তার মাথায় আসে শিক্ষা বিনিময়ের একটি পরিকল্পনা। আর সেই ভাবনাকে বাস্তব রূপ দেন ১৯৮৭ সালে, চালু করেন ইরাসমাস কর্মসূচি।
ইরাসমাস ওয়েবসাইট অনুযায়ী, কর্মসূচি চালুর পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ শিক্ষার্থী এতে অংশ নিয়েছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক পরিচালিত এই কর্মসূচিটি ইউরোপ জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা বাড়াতে কাজ করে।
২০১৮ সালে কোরাদি বলেছিলেন, স্নায়ুযুদ্ধের সময় জন্ম নেওয়া এই কর্মসূচির ধারণা ছিল ‘আমার ব্যক্তিগত শান্তিবাদী মিশন।’
রোমে জন্ম নেওয়া এই শিক্ষাবিদ জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন, দ্য হেগ একাডেমি অফ ইন্টারন্যাশনাল ল’ এবং লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে শিক্ষা অধিকার নিয়ে গবেষণা করেছেন।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেন, কোরাদি ‘লাখো তরুণ-তরুণীর জীবনকে অনুপ্রাণিত করেছেন, যারা ভ্রমণ করেছে, পড়াশোনা করেছে এবং নানা সংস্কৃতিকে আপন করে নিয়েছে।’
আন্তোনিও কোরাদিকে ‘জেনারেশন ইউরোপ’-এর জন্মদাত্রী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
ইউরোপীয় বিষয়ক ফরাসি মন্ত্রী বেঞ্জামিন হাদ্দাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেন, ‘ইউরোপের তরুণ প্রজন্ম তার কাছে ঋণী।’