বাসস
  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫৪

দেশগুলোকে জলবায়ু পরিকল্পনা জমা দিতে চাপ দিচ্ছে জাতিসংঘ

ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘ বুধবার তাদের জলবায়ু পরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। কারণ, কয়েক ডজন দেশের মধ্যে প্রধান দূষণকারী দেশগুলো এখনো নতুন প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে পারেনি। 

প্যারিস থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।

প্যারিস চুক্তির আওতাধীন প্রায় ২শ’টি দেশের ফেব্রুয়ারিতে হালনাগাদ নীতিমালা পেশ করার কথা ছিল, যা ২০৩৫ সালের নির্গমন হ্রাসের একটি কঠোর লক্ষ্য এবং এটি অর্জনের জন্য একটি বিস্তারিত নীলনকশা প্রদান করবে।

কিন্তু মাত্র কয়েকটি দেশ নির্দিষ্ট সময় সীমার মধ্যে প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে পেরেছিল এবং ছয় মাস পরেও  চীন, ভারত এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মতো দেশগুলো তাদের সংশোধিত পরিকল্পনা জমা দিতে পারেনি।

জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সাইমন স্টিয়েল একটি চিঠিতে পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘এই জাতীয় জলবায়ু পরিকল্পনাগুলো কাগজে লেখা কথার চেয়ে অনেক বেশি; এগুলো এই শতাব্দীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার সবচেয়ে শক্তিশালী গুলোর মধ্যে একটি এবং বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে মানবতার লড়াইয়ের ভিত্তিপ্রস্তর।’

জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (ইউএনএফসিসিসি) নভেম্বরে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় বার্ষিক জাতিসংঘ জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলন কপ-৩০ এর আগে প্রস্তুত করা একটি প্রতিবেদনে নতুন প্রতিশ্রুতিগুলোর বহুল প্রত্যাশিত পর্যালোচনা পরিচালনা করার কথা রয়েছে।

ইউএনএফসিসিসি-এর নির্বাহী সচিব স্টিয়েল বলেন, সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে জমা দেওয়া পরিকল্পনাগুলো বিশ্বব্যাপী জলবায়ু কর্মকাণ্ডের এই ‘গুরুত্বপূর্ণ আপডেট’-এর জন্য যথেষ্ট হবে।

তিনি বিশ্ব নেতাদের ২৪ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে আয়োজিত একটি বিশেষ জলবায়ু অনুষ্ঠানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাদের নতুন নীতি ঘোষণা করার জন্য উৎসাহিত করেন।

ইউএনএফসিসিসি’র একজন মুখপাত্র এএফপি’কে জানিয়েছেন, প্রায় ১৯০টি দেশ ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা এই বছর তাদের সংশোধনী জমা দেওয়ার ইচ্ছা পোষণ করছে।

জাতিসংঘের একটি ডাটাবেস অনুসারে, জমা দেওয়া তথ্যের ওপর নজর রেখে প্রধান অর্থনীতির দেশ ব্রাজিল, যুক্তরাজ্য, জাপান এবং কানাডাসহ প্রায় ৩০টি দেশ ইতোমধ্যেই তা করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও একটি পরিকল্পনা পেশ করেছে, তবে এটি মূলত প্রতীকী বলে মনে করা হচ্ছে। এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি থেকে ওয়াশিংটনকে প্রত্যাহার করার আগে তৈরি করা হয়েছিল।

বিশ্বব্যাপী ধীরগতির প্রতিক্রিয়া জলবায়ু পদক্ষেপের প্রতি আগ্রহ হ্রাসের ইঙ্গিত দিচ্ছে। ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তা সংকট এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে দেশগুলো বিভ্রান্ত হচ্ছে।

একসাথে বিবেচনা করলে জাতীয় জলবায়ু পরিকল্পনাগুলো প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিনিধিত্ব করে। যাতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প স্তরের তুলনায় দুই ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা যায়।

বিশ্ব বর্তমানে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে।

বিশ্বব্যাপী  কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি পাচ্ছে কিন্তু প্যারিস চুক্তির অধীনে সম্মত নিরাপদ স্তরে বৈশ্বিক উষ্ণতা সীমিত করতে এই দশকের শেষ নাগাদ প্রায় অর্ধেক কমাতে হবে।