বাসস
  ০৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯:০৫

যুক্তরাষ্ট্রকে পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার দায় নিতে হবে: ইরান

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা, ৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): তেহরান সোমবার জানিয়েছে, ভবিষ্যতে যে কোনো আলোচনার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হামলার জন্য দায়ী করা হবে এবং ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে। একই সঙ্গে তেহরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে।

গত ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর হামলা চালায়। ওই হামলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের শুরু করা যুদ্ধে স্বল্প সময়ের জন্য অংশগ্রহণ করে। এই যুদ্ধ ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চলমান আলোচনাকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

তেহরান  এএফপি জানায়,  পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়ি সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যেকোনো সম্ভাব্য আলোচনায়... ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক আগ্রাসনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করা এবং তাদের কাছে ক্ষতিপূরণ চাওয়া অন্যতম বিষয় হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাকায়ি বলেন, ‘না।’

গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে ইসরাইল নজিরবিহীন এক হামলায় ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্যবস্তু করে, যার মধ্যে আবাসিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই যুদ্ধ ১২ দিন স্থায়ী হয় এবং যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফর্দো, ইসফাহান ও নাটাঞ্জে পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালিয়ে এতে অংশ নেয়।

এই সংঘাত ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া সবচেয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা বিঘ্নিত করে।

যুদ্ধের পর তেহরান জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিত করে এবং নতুন করে আলোচনা শুরুর আগে সামরিক পদক্ষেপ থেকে নিরাপত্তার গ্যারান্টি দাবি করেছে।

ওয়াশিংটন তেহরানের ক্ষতিপূরণের দাবিকে ‘উপহাসযোগ্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

বাকায়ি সোমবার বলেন, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে জাতিসংঘের চুক্তির (এনটিপি) প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে তিনি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ)-র ‘রাজনৈতিক ও অপেশাদার’ আচরণের সমালোচনা করেন।

তিনি আরও জানান, ‘আইএইএ-এর উপপ্রধান আগামী ১০ দিনের মধ্যে ইরান সফর করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।’

গত মাসে ইরান বলেছিল, জাতিসংঘ সংস্থার সঙ্গে ভবিষ্যৎ সহযোগিতা ‘নতুন রূপে’ হবে।

২৫ জুলাই, ইরানি কূটনীতিকরা জার্মানি, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এটি ছিল ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর প্রথম বৈঠক।

এই তিন ইউরোপীয় দেশ ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অংশ ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে দেশটির সরে যাওয়ার মাধ্যমে কার্যত ভেঙে পড়ে।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই তিন দেশ হুমকি দিয়েছে, তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে তারা আবারও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।

ইরান বারবার এই নিষেধাজ্ঞাগুলোকে ‘অবৈধ’ বলে আখ্যা দিয়েছে এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অধিকারের ওপর জোর দিয়েছে।

ইসরাইল ও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির অভিযোগ তুললেও তেহরান এ অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।