শিরোনাম
ঢাকা, ২৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজায় দৈনিক "কৌশলগত বিরতি" ঘোষণা করায় সোমবার কিছু খাদ্যবাহী ট্রাক সেখানে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। তবে মানবিক সংস্থাগুলো হুঁশিয়ার করে বলেছে, এই সহায়তা এখনও খুবই অপ্রতুল এবং ক্ষুধা ও অপুষ্টির ভয়াবহতা রোধে আরও ব্যাপক সাহায্য প্রয়োজন।
গাজা সিটি থেকে এএফপি জানায়, গাজার দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষ চরম খাদ্য সংকটে দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পর সোমবার প্রথমবারের মতো প্রায় পাঁচ কেজি ময়দা পেয়েছেন জামিল সাফাদি নামের এক ব্যক্তি। তিনি তার স্ত্রী, ছয় সন্তান ও অসুস্থ পিতার সঙ্গে একটি অস্থায়ী তাঁবুতে অবস্থান করছেন।
তিনি বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে আমি ভোরে উঠে খাবার খুঁজেছি। আজ প্রথম ময়দা পেলাম, সেটাও প্রতিবেশীর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছি।’
কিন্তু অনেকে এখনো খাদ্য পাননি। কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন, ত্রাণবাহী ট্রাক লুট হয়েছে কিংবা গার্ডদের গুলিতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
এক ভুক্তভোগী আমির আল-রাশ বলেন, ‘আমি মৃতদেহ দেখেছি, আহত মানুষ দেখেছি। মানুষ বাধ্য হয়ে প্রতিদিন চেষ্টা করছে ময়দা পাওয়ার, কিন্তু মিশর থেকে আসা পরিমাণ খুবই কম।’
ইসরাইল ২ মার্চ ২০২৫ থেকে গাজা অবরুদ্ধ করে রাখে। এরপর মে মাসের শেষ দিকে সীমিত আকারে সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়।
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সিভিল অ্যাফেয়ার্স সংস্থা জানায়, রোববার ১২০টি ট্রাক গাজায় প্রবেশ করেছে এবং সোমবার আরও প্রবেশ করছে।
জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত প্যারাশুটে খাদ্য ফেলে দিচ্ছে গাজায়, এবং মিশর রাফা সীমান্ত দিয়ে ত্রাণ ট্রাক পাঠিয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ সতর্ক করে বলেছে, গাজার জনগণের জন্য।প্রতিদিন অন্তত ৫০০-৬০০ ট্রাক খাদ্য, ওষুধ ও স্যানিটারি সামগ্রী প্রয়োজন।
সংস্থা জানায়, ‘হাজার হাজার ট্রাক বর্তমানে জর্ডান ও মিশরে অপেক্ষমাণ। সব সীমান্ত খুলে গাজায় ত্রাণ ঢুকতে দিতে হবে।’
তারা আরও জানায়, ‘গাজা সিটিতে প্রতি পাঁচজন শিশুর মধ্যে একজন অপুষ্টিতে ভুগছে এবং ১০০-এর বেশি মানুষ ইতোমধ্যে অনাহারে মারা গেছে।’
গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, সোমবার ইসরাইলি হামলায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে রাতে হামলায় পাঁচজন নিহত হন।
এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর মৃত্যু হলেও তার গর্ভস্থ শিশুকে ফিল্ড হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জীবিত উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে প্যালেস্টাইন রেড ক্রিসেন্ট।
এ সহিংসতা ও মানবিক বিপর্যয়ের মাঝেও ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতির আলোচনা (মধ্যস্থতায় মিশর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র) স্থবির হয়ে আছে।
তবে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের নেতৃত্বে জাতিসংঘে একটি কূটনৈতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে দুই-রাষ্ট্র সমাধানের নতুন উদ্যোগে গতি আনার চেষ্টা চলছে।