বাসস
  ১২ জুলাই ২০২৫, ২০:২৮

গাজায় জ্বালানি ঘাটতি ‘সংকটজনক’ : জাতিসংঘের সতর্কবার্তা

ঢাকা, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জাতিসংঘ শনিবার সতর্ক করেছে যে, গাজা উপত্যকায় জ্বালানির মারাত্মক ঘাটতি এখন ‘সংকটজনক পর্যায়ে’ পৌঁছেছে, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মানুষের দুর্ভোগ আরও গভীরতর করবে।

জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, জাতিসংঘের সাতটি সংস্থা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘জ্বালানি হলো গাজায় টিকে থাকার মেরুদণ্ড।’

তারা জানায়, হাসপাতাল, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, অ্যাম্বুলেন্স এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য জ্বালানি অপরিহার্য। এমনকি বেকারির কার্যক্রম চালু রাখতেও জ্বালানির প্রয়োজন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ভয়াবহ হামলার পর শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকেই গাজায় চরম জ্বালানি সংকট চলছে।

কিন্তু এখন পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে, ‘গাজায় জ্বালানির ঘাটতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে,’ বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (এফএও) এবং মানবিক সমন্বয় সংস্থা (ওসিএইচএ)-সহ অন্যান্য জাতিসংঘ সংস্থা।

তারা উল্লেখ করে, ‘প্রায় দুই বছর ধরে চলমান যুদ্ধের পর গাজার মানুষ চরম দুর্দশায় দিন কাটাচ্ছে। বিশেষ করে খাদ্য ঘাটতি সর্বত্র বিরাজমান।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে ইতোমধ্যেই অনাহারের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর ওপর এক অসহনীয় নতুন বোঝা চেপে বসবে।’

জাতিসংঘ জানায়, জ্বালানি না থাকলে যেসব সংস্থা মানবিক সহায়তায় কাজ করছে, তারা সম্পূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হবে।

‘এর অর্থ হবে, স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ, নিরাপদ পানি সরবরাহ বন্ধ, সহায়তা পৌঁছানোর পথ বন্ধ।’

বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, ‘জ্বালানি না থাকলে, গাজায় মানবিক প্রচেষ্টা ভেঙে পড়বে।’ 

‘বেকারি ও কমিউনিটি রান্নাঘর বন্ধ হয়ে যাবে। পানি উৎপাদন ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে, যার ফলে পরিবারগুলো নিরাপদ পানির অভাবে পড়বে এবং রাস্তায় আবর্জনা ও মল-মূত্র জমা হতে থাকবে।’

এসব পরিস্থিতিতে ‘ঘাতক রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি’ বেড়ে যায় এবং গাজার সবচেয়ে দুর্বল মানুষগুলো মৃত্যুর আরও কাছাকাছি চলে যায়, বলে সতর্ক করে সংস্থাগুলো।

১৩০ দিনের মধ্যে প্রথমবারের মতো গাজায় জ্বালানি প্রবেশ করতে পারার কয়েকদিন পর জাতিসংঘ এই সতর্কবার্তা দেয়।

তবে সংস্থাগুলোর মতে, যে ৭৫,০০০ লিটার জ্বালানি প্রবেশ করানো গেছে, তা ‘নিত্যদিনের প্রয়োজনের খুবই সামান্য অংশ।’

তারা বলেছে, ‘জাতিসংঘ সংস্থাগুলো ও মানবিক সহায়তাকারী অংশীদাররা এই মুহূর্তের তাৎপর্য যতটা গুরুতর, তা অতিরঞ্জন করে বলা সম্ভব নয়।’

‘জীবন রক্ষাকারী সহায়তা কার্যক্রম চালু রাখতে গাজায় যথাযথ ও নিয়মিতভাবে জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেওয়া আবশ্যক।’