শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ জুন, ২০২৫ (বাসস) : গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, বুধবার ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে কমপক্ষে ২০ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি অঞ্চলে খাদ্য সহায়তা সংগ্রহের জন্য অপেক্ষারত ছয়জনও ছিলেন বলে জানা।
গাজা সিটি থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
জাতিসংঘ গাজা উপত্যকায় ‘খাদ্যের অস্ত্রায়নের’ নিন্দা করার পর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে সর্বশেষ মারাত্মক ঘটনা এটি। গাজা উপত্যকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি-সমর্থিত একটি ফাউন্ডেশন মূলত প্রতিষ্ঠিত মানবিক সংস্থাগুলোকে প্রতিস্থাপন করেছে।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল এএফপিৎকে বলেছেন, মধ্য গাজার একটি এলাকায় ‘সহায়তার জন্য অপেক্ষারত হাজার হাজার বেসামরিক লোককে লক্ষ্য করে ইসরাইলি গুলিবর্ষণের ফলে ছয় জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
বাসাল বলেন, জনতা ইসরাইলি ‘গুলি ও ট্যাঙ্কের গোলা’ কর্তৃক আক্রান্ত হয়েছে।
ইসরাইলি সেনাবাহিনী এএফপি’কে জানিয়েছে, তারা প্রতিবেদনটি ‘খুঁজে দেখছে’।
মঙ্গলবার বেসরকারীভাবে পরিচালিত সাহায্য সংস্থা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) এর ওপর চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মে মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোকে প্রতিস্থাপন করার জন্য ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে আনা হয়েছিল, কিন্তু বিশৃঙ্খল দৃশ্য ও নিরপেক্ষতার উদ্বেগের কারণে তাদের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা, ইউএনআরডব্লিউএ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলি-সমর্থিত ব্যবস্থাকে একটি ‘ঘৃণ্য’ বলে অভিহিত করেছে, যা ফিলিস্তিনিদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের মুখপাত্র, থামিন আল-খেতান, এই ভূখণ্ডে ‘খাদ্যের অস্ত্রায়ন’ এর নিন্দা করেছেন।
মে মাসে সাহায্য অবরোধ শিথিল করা সত্ত্বেও, ইসরাইল বিধিনিষেধ আরোপ করে চলেছে।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে, দুর্লভ সরবরাহের সন্ধানে সাহায্য কেন্দ্রগুলোর কাছে ৫শ’ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী মঙ্গলবার সাহায্যের জন্য অপেক্ষারত ৪৬ জনকে হত্যা করেছে।
জিএইচএফ তাদের সাহায্য কেন্দ্রের কাছে মৃত্যুর দায় অস্বীকার করেছে।
বেসামরিক প্রতিরক্ষা মুখপাত্র বাসাল বলেছেন, বুধবার ভোরে মধ্য ও উত্তর গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
বাসাল বলেন, ভোর বেলায় মধ্য নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে হামলায় এক শিশুসহ ছয়জন নিহত হয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, দেইর এল-বালাহ ও গাজা শহরের পূর্বে দুটি পৃথক হামলায় আরো আট জন নিহত হয়েছেন।
গাজা উপত্যকায় গণমাধ্যমের ওপর ইসরাইলি নিষেধাজ্ঞা ও কিছু এলাকায় প্রবেশের অসুবিধার কারণে এএফপি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে উদ্ধারকারী ও কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত মৃতের সংখ্যা ও বিশদ পরিস্থিতি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারছে না।
সরকারী পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির হিসাব অনুযায়ী, গত ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলে হামাসের হামলার ফলে এই যুদ্ধ শুরু হয়। ওই হামলায় ১ হাজার ২শ’ ১৯ জন নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক লোক।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৬ হাজার ৭৭ জন নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
জাতিসংঘ তাদের পরিসংখ্যান নির্ভরযোগ্য বলে মনে করে।