শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ জুন, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের চালানো বিমান হামলায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস হয়নি। এই হামলা শুধুমাত্র দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম শুধুমাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে। যদিও ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ ঘোষণা করেছেন।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সপ্তাহান্তে বাঙ্কার-বিধ্বংসী বোমা হামলার মাধ্যমে সংঘাতে যোগ দেওয়ার পর বলেছিলেন, ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে। টানা ১২ দিন তীব্র পাল্টাপাল্টি হামলার পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ইরান ও ইসরাইল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত হামলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই দেশ।
তবে একটি গোপন প্রাথমিক মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে ইরানের ওপর আমেরিকান হামলার ফলে তার পারমাণবিক কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট মূল্যায়নের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে তিনি বলেছেন এটি ‘সম্পূর্ণ ভুল’।
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র থাকবে না’।
তিনি বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক প্রকল্প ব্যর্থ করে দিয়েছি’ এবং যদি ইরানের কেউ এটি পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করে, তাহলে আমরা একই দৃঢ় সংকল্প নিয়ে, একই তীব্রতার সাথে, যেকোনো প্রচেষ্টা ব্যর্থ করার জন্য কাজ করব।’
ইসরাইল বলেছিল, গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া তাদের বোমা হামলার লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখা, যা তেহরান বারবার অস্বীকার করে আসছে।
ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলেছে, তাদের হামলা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ‘বছরের পর বছর’ পিছিয়ে দিয়েছে।
মঙ্গলবার ট্রাম্প যুদ্ধবিরতির প্রাথমিক লঙ্ঘনের জন্য উভয় পক্ষকে ক্ষুব্ধভাবে তিরস্কার করার পর, তেহরান ঘোষণা করেছে ইসরাইল যদি একই কাজ করে তবে তারা চুক্তির শর্তাবলী মেনে চলবে, অন্যদিকে ইসরাইল বলেছে তারা আরো হামলা থেকে বিরত থাকবে।
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, তার দেশ তার পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় ফিরে যেতে ইচ্ছুক, তবে তার দেশ পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ‘তার বৈধ অধিকার’ জোরদার করে চলবে।
মঙ্গলবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের সাথে পরিচিত ব্যক্তিদের উদ্ধৃত করে বলেছে, আমেরিকার হামলা ইরানের সেন্ট্রিফিউজ বা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করতে পারেনি।
প্রতিবেদন অনুসারে, ভূগর্ভস্থ ভবন ধ্বংস না করেই এই হামলা কিছু স্থাপনার প্রবেশপথ বন্ধ করে দিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব লিভিট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বলেছেন, ‘এই কথিত মূল্যায়ন ফাঁস হওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে হেয় প্রতিপন্ন করার এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ধ্বংস করার জন্য নিখুঁতভাবে সম্পাদিত অভিযান পরিচালনাকারী সাহসী যোদ্ধা পাইলটদের অসম্মান করার একটি স্পষ্ট প্রচেষ্টা।’
যদিও ইরান এবং ইসরাইল কয়েক দশক ধরে ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত, তাদের ১২ দিনের সংঘর্ষ ছিল তাদের মধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক।
ইসরাইলি হামলা পারমাণবিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করেছে। তারা ইরানের বিজ্ঞানী এবং ঊর্ধ্বতন সামরিক ব্যক্তিদের হত্যা করেছে। যার ফলে, আবাসিক এলাকায় ইসরাইলের ওপর ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।