শিরোনাম
ঢাকা, ২৪ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ইরাকের দুটি সামরিক ঘাঁটিতে মঙ্গলবার ভোরে অজ্ঞাত ড্রোন হামলা হয়েছে। নিরাপত্তা সূত্র এ তথ্য জানায়।
বাগদাদ থেকে এএফপি জানায়, তেহরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলার প্রতিশোধ হিসেবে কাতারে অবস্থিত মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম মার্কিন সামরিক স্থাপনায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘন্টা পরেই এই হামলা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, বাগদাদের উত্তরে তাজি ঘাঁটিতে অবস্থিত একটি রাডার সিস্টেমে প্রথম হামলাটি চালানো হয়।
কয়েক ঘন্টা পরে, নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানায়, ‘দক্ষিণ ইরাকের জি কার প্রদেশের ইমাম আলী বিমান ঘাঁটিতে অবস্থিত রাডার সিস্টেমকে লক্ষ্য করে একটি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।’
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১০ কিলোমিটার পশ্চিমে রাদোয়ানিয়া জেলায় আরেকটি ড্রোন বিধ্বস্ত হয়েছে, যেখানে জিহাদি-বিরোধী জোটের অংশ হিসেবে মার্কিন সেনারা একটি ঘাঁটিতে মোতায়েন রয়েছে।
সরকারি নিরাপত্তা মুখপাত্র সাদ মান বলেন,‘একটি অজ্ঞাত ড্রোন তাজিতে রাডারে আঘাত করে।’ বিস্তারিত তথ্য না দিয়ে তিনি আরও বলেন আরেকটি ড্রোন ‘একটি জেনারেটরের কাছে পড়ে’।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়ালিদ আল-তামিমি সরকারি ইরাকি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, হামলায় বস্তুগত ক্ষতি হয়েছে কিন্তু কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
তাজি ঘাঁটিতে বেশ কয়েক বছর আগে মার্কিন সেনাদের আবাসস্থল ছিল এবং প্রায়শই রকেট হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল।
কেউ এই হামলার দায় স্বীকার করেনি।
১৩ জুন ইরানের বিরুদ্ধে ইসরাইলের আকস্মিক হামলা চালানোর পর থেকে ইসরাইল ও ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বিনিময় করে আসছে, যার ফলে আঞ্চলিক সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইরানের বিরুদ্ধে তার মিত্র ইসরাইলের সামরিক অভিযানে যোগ দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিশাল বাঙ্কার-বাস্টিং বোমা দিয়ে ইরানের একটি ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রে আক্রমণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এবং শনিবার থেকে রোববার রাতে আরও দুটি পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত করেছে।
পূর্ববর্তী বছরগুলোয় মার্কিন সেনাদের আবাসস্থলে হামলা চালানো ইরান-সমর্থিত ইরাকি গোষ্ঠীগুলোর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে জানায়, ‘অবশ্যই’ গোষ্ঠীগুলোর ড্রোন হামলার সাথে কোনও সম্পর্ক নেই।
ইরানি হামলার পর ইরাকি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, ‘যারা জিহাদি-বিরোধী জোটের অংশ হিসেবে ইরাকে মোতায়েন রয়েছে তারা এখন পর্যন্ত তেহরানে মার্কিন সেনাদের ঘাঁটিতে আক্রমণ করেনি।’
ইসরাইল-ইরান সংঘাত ইরাককে তার আকাশসীমা বন্ধ করতে বাধ্য করেছে।
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে, বাগদাদ সর্বশেষ সহিংসতা যাতে তার ভূখণ্ডে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য কূটনৈতিক চ্যানেল ব্যবহার করে কাজ করছে।
ইসরাইলি বিমানগুলোকে ইরানের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালানোর জন্য ইরাকি আকাশসীমা ব্যবহার করতে বাধা দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এক জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, ইরানকে তার ভূখণ্ডে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা না করার জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে।
তেহরান কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালানোর পর, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচি বলেন, ইসরাইল যদি আক্রমণ বন্ধ করে তবে তার দেশ তাদের হামলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করবে না। এর কয়েক ঘন্টা আগে ট্রাম্প তাদের সংঘাতের ‘আনুষ্ঠানিক অবসান’ ঘটানোর লক্ষ্যে একটি পর্যায়ক্রমিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে।