বাসস
  ১৫ জুন ২০২৫, ১২:০৭

রাশিয়া পরবর্তী দফা ইউক্রেন আলোচনার জন্য প্রস্তুত : পুতিন

ঢাকা, ১৫ জুন, ২০২৫ (বাসস): রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানিয়েছেন, ২২ জুনের পর কিয়েভের সাথে নতুন দফা শান্তি আলোচনা করতে মস্কো প্রস্তুত। পক্ষগুলো এ সময় বন্দী ও সৈন্যদের মৃতদেহ বিনিময় সম্পন্ন করবে।

মস্কো থেকে এএফপি জানায়, ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কি ইউক্রেন পরবর্তী দফা আলোচনায় রাজি হবে কিনা তা উল্লেখ করেননি, কেবল বলেছেন যে ‘আদান-প্রদান সম্পন্ন হবে এবং পক্ষগুলো পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করবে।’ 

রিপাবলিকান পার্টি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে পুতিন ও ট্রাম্প পঞ্চমবারের মতো একটি ফোনালাপ করেছেন এবং মস্কোর সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করেছেন, যা ট্রাম্পের পূর্বসূরী জো বাইডেনের প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ ওয়াশিংটনের মিত্রদের হতবাক করে দিয়েছে, কিয়েভকে মার্কিন সাহায্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দেহ তৈরি করেছে এবং ট্রাম্প যদি মার্কিন সামরিক, আর্থিক এবং গোয়েন্দা সহায়তা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে সরবরাহের ঘাটতি কীভাবে পূরণ করা যাবে তা নিয়ে ইউরোপকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ক্রেমলিন জানিয়েছে, কথোপকথনের সময় ‘উভয় নেতাই তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।’ তারা ইরান ও ইসরাইলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাত নিয়েও আলোচনা করেছেন।

এতে আরও বলা হয়, দুই রাষ্ট্রপ্রধান ‘ব্যবসায়িক ভঙ্গিমায় যোগাযোগ করেন এবং দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক এজেন্ডার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর সমাধান খোঁজেন। এই বিষয়গুলি যত জটিলই হোক না কেন।’

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন যে পুতিন ৭৯ বছর বয়সে ‘আমাকে খুব সুন্দরভাবে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে’ ফোন করেন, কিন্তু ‘আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ হল তারা দুজন ইরান-ইসরাইল সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন।

ট্রাম্প রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমার মতোই, ইসরাইল-ইরানের এই যুদ্ধ শেষ হওয়া উচিত বলে ‘তিনি (পুতিন) মনে করেন, যা আমি ব্যাখ্যা করেছিলাম, তার যুদ্ধও শেষ হওয়া উচিত ।

জেলেনস্কি রাশিয়ার সাথে সংলাপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘সুর পরিবর্তন’ করার আহ্বান জানিয়ে মন্তব্য করেছেন যে, এটি ‘অত্যধিক উষ্ণ’ এবং যুদ্ধ বন্ধ করতে সাহায্য করবে না।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এক্স-এ বলেন, ‘সহায়তা হ্রাসের যেকোনো ইঙ্গিত, অথবা ইউক্রেন ও রাশিয়াকে সমান বিবেচনা করা, একেবারেই অন্যায্য। রাশিয়া আক্রমণকারী। তারা এই যুদ্ধ শুরু করেছে। তারা এটি শেষ করতে চায় না।’ 

শুক্রবার ইরানের উপর ইসরাইলের একটি বৃহৎ আকারের আক্রমণ চালানোর উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক উত্তেজনার ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে ওয়াশিংটন তার ঘনিষ্ঠ মিত্র ইসরাইলের প্রতিরক্ষা জোরদার করার জন্য তার খরচে সম্পদ স্থানান্তর করতে পারে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চাই এর কারণে ইউক্রেনে সাহায্য যাতে কমে না যায়,’ ‘গতবার, এটিই ইউক্রেনে সাহায্যের গতি কমিয়ে দেয়ার একটি কারণ ছিল।’

শনিবারের আগে, ইউক্রেন ও রাশিয়া এই সপ্তাহে চতুর্থবারের মতো বন্দী বিনিময় করেছে, যা উভয় পক্ষের এক সহস্র আহত বন্দীকে ফিরিয়ে আনা এবং নিহত সৈন্যদের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার একটি বৃহৎ পরিকল্পনার অংশ।

ইস্তাম্বুলে বন্দী চুক্তি ছিল সাম্প্রতিক দুটি দফা আলোচনার একমাত্র দৃশ্যমান ফলাফল।

রাশিয়া তিন বছরের আক্রমণ বন্ধের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা ইউক্রেনকে তাদের ভূখণ্ড ছেড়ে দেওয়ার এবং শান্তি চাইলে পশ্চিমা সামরিক সহায়তা ত্যাগ করার দাবি জানিয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর পর থেকে, লাখ লাখ মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে শহর ও নগরগুলো ভারী বোমাবর্ষণে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে।