শিরোনাম
ঢাকা, ১১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ৪৬ শতাংশ বাণিজ্য শুল্ক মোকাবিলায় গ্যাপ এবং লিভাই স্ট্রসসহ প্রধান মার্কিন পোশাক কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা চেয়েছে ভিয়েতনাম।
হ্যানয় থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর জন্য পোশাক ও জুতা উৎপাদনে শীর্ষ স্থানীয় দেশগুলোর মধ্যে থাকা চীন ও মেক্সিকোর পরেই ভিয়েতনাম বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় সর্বোচ্চ বাণিজ্য উদ্বৃত্তের অধিকারী। এর ফলে ট্রাম্পের এপ্রিলের ‘লিবারেশন ডে’ শুল্ক নীতির আওতায় পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে দেশটি।
এই পরিণতি এড়াতে ভিয়েতনামের কর্মকর্তারা মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টদের সমর্থন চাইছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে কৃষি পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাণিজ্যিক ভারসাম্য আনার চেষ্টাও করছেন তারা।
ভিয়েতনামের মন্ত্রী নগুয়েন হং ডিয়েন এখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে রয়েছেন। তিনি এর প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং গ্যাপ, লেভি স্ট্রস ও আন্ডার আর্মার কোম্পানির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
সোমবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী নগুয়েন হং ডিয়েন বৈঠক করেছেন আমেরিকান এ্যাপারেল এন্ড ফুওয়্যার এসোসিয়েশন (এএএফএ) এবং গ্যাপ, লেভি স্ট্রস ও আন্ডার আর্মার কোম্পানির নেতাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।
২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্র ছিল ভিয়েতনামের শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য। যেখানে রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৭ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ১৩ বিলিয়ন বেশি (৪৪ বিলিয়ন ডলার ছিল)। পোশাক ও জুতা এই রপ্তানির প্রধান পণ্য।
মঙ্গলবার অনলাইনে প্রকাশিত বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী নগুয়েন হং ডিয়েন তার দেশের পক্ষ থেকে ‘বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার’ হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনামের সঙ্গে সহযোগিতা কৌশলগতভাবে দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হবে এবং দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্য ন্যায্য, সম্প্রীতিপূর্ণ ও টেকসইভাবে উন্নয়নে সহায়ক হবে।’
বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী নগুয়েন হং ডিয়েন মার্কিন বিনিয়োগ কোম্পানি ওয়ারবার্গ পিনকাস ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড এর প্রধান জেফরি পার্লম্যানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এপ্রিল মাসে ট্রাম্প যখন তার শুল্ক পরিকল্পনা ঘোষণা করেন, তখন তিনি দাবি করেন যে ভিয়েতনাম যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ৯০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা আসলে হ্যানয়ের ১২৩.৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্তকে রূপকভাবে বোঝাতে বলা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন বিশেষ করে ক্ষুব্ধ চীনকে এড়িয়ে শুল্ক ফাঁকি দিতে ভিয়েতনামের বিষয়টি ব্যবহার করে।
তবে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনে ভিয়েতনামের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা বিবেচনায় নিয়ে দেশটিতে কাজ করা অনেক মার্কিন কোম্পানি হোয়াইট হাউসকে এই শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছে।
দুই দেশের বাণিজ্য আলোচকরা গত সপ্তাহে প্যারিসে আলোচনার সর্বশেষ পর্ব শেষ করেছেন এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আবার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
গত সপ্তাহে হ্যানয় যুক্তরাষ্ট্র কৃষিপণ্য ও অন্যান্য কাঁচামাল কেনার জন্য প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে, যাতে বাণিজ্যিক ভারসাম্য আনা যায়।
এদিকে, ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট গ্রুপ গত মাসে ভিয়েতনামে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের বিলাসবহুল গল্ফ রিসোর্ট নির্মাণ শুরু করেছে এবং তার পুত্র এরিক ট্রাম্প হো চি মিন সিটিতে একটি সম্ভাব্য টাওয়ার প্রকল্পের স্থান খুঁজে দেখেছেন।