ঢাকা, ১১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীন উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ বাণিজ্য যুদ্ধ শিথিল করতে একটি চুক্তি সম্পন্ন করার সময় চীন বিরল মৃত্তিকার আধিপত্যকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হিসেবে বেছে নিয়েছে।

বৈদ্যুতিক যানবাহন, হার্ড ড্রাইভ, উইন্ড টারবাইন এবং ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহৃত, বিরল পৃথিবীর উপাদানগুলো আধুনিক অর্থনীতি এবং জাতীয় প্রতিরক্ষার জন্য অপরিহার্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে আলোচনায় দুর্লভ মৃত্তিকা কীভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে তা এএফপি এক নজরে দেখেছে।

-‘ খনির উত্থান’ -

১৯৯২ সালে প্রয়াত চীনা নেতা দেং শিয়াওপিং বলেছিলেন, যার বাজার-বান্ধব সংস্কার দেশটিকে অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার পথে ভূমিকা রেখেছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে তেল আছে। চীনের কাছে আছে দুর্লভ খনি।’

তারপর থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত খনি সংস্থাগুলোতে বেইজিংয়ের বিপুল বিনিয়োগ এবং অন্যান্য শিল্পের তুলনায় পরিবেশগত নিয়মকানুন শিথিল করার ফলে চীন বিশ্বের শীর্ষ সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে।

আন্তর্জাতিক শক্তি সংস্থার মতে, দেশটি এখন বিশ্বব্যাপী পরিশোধিত উৎপাদনের ৯২ শতাংশের দাবিদার।

কিন্তু এপ্রিলের শুরুতে বেইজিং দেশীয় রপ্তানিকারকদের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে বাধ্য করার পর থেকে চীন থেকে বিশ্বজুড়ে উৎপাদকদের কাছে দুর্লভ মাটির প্রবাহ ধীর হয়ে গেছে। যাকে ব্যাপকভাবে মার্কিন শুল্ক আরোপকে দায়ী করা হচ্ছে। 

নতুন প্রয়োজনীয়তার অধীনে যে শিল্প গোষ্ঠীগুলো জটিল এবং ধীরগতির বলে জানিয়েছে, সাতটি মূল উপাদান এবং সম্পর্কিত চুম্বক বিদেশী ক্রেতাদের কাছে পাঠানোর জন্য বেইজিংয়ের অনুমোদন প্রয়োজন।

- ‘গভীর প্রভাব’ -

চীনা প্রতিপক্ষদের সাথে আলোচনায় মার্কিন কর্মকর্তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে। এই সপ্তাহে লন্ডনে উভয় পক্ষের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউটের সেন্টার ফর চায়না অ্যানালাইসিসের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ পল ট্রিওলো সোমবার এক অনলাইন সেমিনারে বলেছেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কারখানা বন্ধ থাকার কারণে বিরল মাটির বিষয়টি স্পষ্টতই বাণিজ্য আলোচনার অন্যান্য অংশগুলোকে ছাপিয়ে গেছে।’

ট্রিওলো ‘হোয়াইট হাউসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে’ বলেছেন, ‘সেই বিঘ্ন যার ফলে মার্কিন গাড়ি জায়ান্ট ফোর্ড তাদের এক্সপ্লোরার এসইউভির উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিল।’

গতকাল মঙ্গলবার দুই দেশের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা বাণিজ্যের অগ্রগতির জন্য একটি ‘কাঠামো’ নিয়ে একমত হয়েছেন। মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিরল মৃত্তিকাতে প্রবেশাধিকার নিয়ে উদ্বেগগুলো অবশেষে ‘সমাধান’ হবে।

- ‘বিরল পৃথিবীর সুবিধা’ -

লাইসেন্স প্রদানের ধীরগতির কারণে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, আরো গাড়ি নির্মাতারা চালানের অপেক্ষায় থাকাকালীন উৎপাদন বন্ধ করতে বাধ্য হবে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে বলেছে, একটি ‘দায়িত্বশীল প্রধান দেশ’ হিসেবে তারা নির্দিষ্ট সংখ্যক রপ্তানি আবেদন অনুমোদন করেছে এবং আরো জানিয়েছে, তারা ‘প্রাসঙ্গিক দেশগুলোর’ সাথে সম্পর্কিত সংলাপ জোরদার করতে ইচ্ছুক।