ঢাকা, ১১ জুন, ২০২৫ (বাসস) : নিন্টেন্ডো জানিয়েছে, তাদের নতুন গেম কনসোল সুইচ-২ বিশ্বজুড়ে উদ্বোধনের পর প্রথম চার দিনের মধ্যেই রেকর্ড ৩৫ লক্ষ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। জাপানি ভিডিও গেম জায়ান্ট  নিন্টেন্ডো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে এটি যেকোনো নিন্টেন্ডো হার্ডওয়্যারের ইতিহাসে প্রথম চার দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ বৈশ্বিক বিক্রি।

টোকিও থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে। 

সুইচ-২ আগের মডেলের তুলনায় বড় স্ক্রিন ও অধিক শক্তিশালী প্রসেসরের সুবিধা নিয়ে এসেছে। এটি নিন্টেন্ডোর জনপ্রিয় সুইচ কনসোলের একটি উন্নত সংস্করণ। গত বৃহস্পতিবার বাজারে আসার পর থেকেই এটি নিয়ে বিশ্বজুড়ে দারুণ উচ্ছ্বাস দেখা যায় । প্রি-অর্ডার দ্রুত শেষ হয়ে যায় এবং অনেক জায়গায় মধ্যরাতেই দোকান খুলে কনসোল বিক্রি হয়।

২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা মূল সুইচ কনসোল এখন পর্যন্ত ১৫ কোটি ২০ লক্ষ ইউনিট বিক্রি হয়েছে। যা বিশ্বের তৃতীয় সর্বাধিক বিক্রিত গেম কনসোল হিসেবে প্রতিষ্ঠা দিয়েছে। মহামারির সময় ‘অ্যানিম্যাল ক্রসিং’-এর মতো গেম এই কনসোলকে ব্যাপক জনপ্রিয়তা এনে দেয়।

বিশ্লেষকরা পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে সুইচ-২ শক্তিশালী শুরুর মাধ্যমে রেকর্ড গড়তে পারে। তবে এটি কি আদৌ পূর্বসূরির মতো দীর্ঘমেয়াদে সফল হবে কি-না সেটাই এখন দেখার বিষয়।

নিন্টেন্ডোর সামনে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। যেমন : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে অনিশ্চয়তা এবং নতুন ডিভাইসের তুলনামূলক উচ্চমূল্যের কারণে কতজন গ্রাহক সেটি কিনতে রাজি হবেন, তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে সুইচ-২-এর মূল্য ৪৪৯.৯৯ ডলার, যেখানে মূল সুইচের মূল্য ছিল ২৯৯.৯৯ ডলার।

উভয় কনসোলই হাইব্রিড অর্থাৎ টিভিতে সংযুক্ত করে অথবা হাতে নিয়েও খেলা যায়।

নতুন গেম যেমন ‘ডঙ্কি কং ব্যানাঞ্জা’ ও ‘মারিও কার্ট ওয়ার্ল্ড’ যেখানে খেলোয়াড়রা অফ-গ্রিড এলাকায় ঘুরে বেড়াতে পারে, সেগুলোর দামও আগের সুইচ গেমগুলোর চেয়ে বেশি।

নিন্টেন্ডো আশা করছে, চলতি আর্থিক বছরে তারা ১ কোটি ৫০ লক্ষ সুইচ-২ বিক্রি করতে পারবে। যা মূল্য সুইচ কনসোলের মুক্তির সময়কার বিক্রির সমান।

নিন্টেন্ডোর সভাপতি শুন্তারো ফুরুকাওয়া গত মে মাসে এক ফাইনানসিয়াল ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘সুইচ-২ এর দাম তুলনামূলকভাবে বেশি। তাই শুরুতে যে গতি দেখা যাচ্ছে তা ধরে রাখা সহজ হবে না।

সুইচ-২ এ রয়েছে আগের তুলনায় আট গুণ বেশি মেমোরি। আর এর কন্ট্রোলারগুলো চুম্বকের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়, যা ডেস্কটপ মাউসের মতোও ব্যবহার করা যায়।

নতুন ফিচারগুলোর মধ্যে অনলাইনে খেলার সময় সরাসরি চ্যাট করা এবং অস্থায়ীভাবে গেম বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার সুবিধা রয়েছে। যা গেম স্ট্রিমিং অভ্যস্ত তরুণদের মধ্যে বিশেষ আকর্ষণ তৈরি করতে পারে।

নিন্টেন্ডোর জন্য এই সাফল্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও তারা এখন থিম পার্ক ও চলচ্চিত্র ব্যবসায় বৈচিত্র্য আনছে। বিশ্লেষকদের মতে প্রতিষ্ঠানটির ৯০ শতাংশের বেশি রাজস্ব এখনো সুইচ সংক্রান্ত ব্যবসা থেকেই আসে।