বাসস
  ০৭ জুন ২০২৫, ১৬:৪৫

সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মুসলিম পরিবারকে স্মরণ করল কানাডা

ঢাকা, ৭ জুন, ২০২৫(বাসস) : কানাডার ওন্টারিওতে চার বছর আগে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত একটি মুসলিম পরিবারকে নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে স্মরণ করেছেন দেশটির মানুষ। এমন ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড যেন আর না ঘটে তা নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তারা। 

ওন্টারিও থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

গত কয়েক বছরের ন্যায় এ বছরও মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই মুসলিম পরিবারটিকে স্মরণ করা হয়েছে।
কানাডার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ওন্টারিও প্রদেশে অবস্থিত লন্ডন একটি মহানগর। যা তার প্রাণবন্ত সংস্কৃতি ও সুন্দর সুন্দর পার্কের জন্য বিখ্যাত। এটি কানাডার ইউনেস্কো ঘোষিত প্রথম সঙ্গীতের নগরীও।

কিন্তু এর বাইরে শহরটির একটি কুখ্যাতিও রয়েছে। সেটা হলো ২০২১ সালের ৬ জুন এখানেই ঘটে ন্যাক্কারজনক এক সন্ত্রাসী হামলা। যাতে নিহত হন চার সদস্যের এক মুসলিম পরিবার।

আধা টন ওজনের একটি ট্রাক পরিবারটিকে চাপা দিয়ে চলে যায়। এতে পরিবারটির চার সদস্য ঘটনাস্থলেই মারা যান। এতিম হয় ৯ বছরের একটি ছেলে। নিহতরা হলেন- সালমান আফজাল (৪৬), তার স্ত্রী মাদিহা সালমান (৪৪), তাদের মেয়ে ইউমনা (১৫) এবং আফজালের মা তালাত (৭৪)। ৯ বছরের ছেলেটি গুরুতর আহত হলেও বেঁচে যায়।

আফজাল পরিবারের রোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডে কানাডার মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। সেই সময় কানাডার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জাস্টিন ট্রুডো। তিনি নিজে হত্যার শিকার পরিবারটির শোক সভায় যোগ দিয়েছিলেন।

শোক সভায় তিনি বলেছিলেন, কানাডায় ধর্মীয় বিদ্বেষ বা ইসলাম বিরোধী মনোভাবের কোনো স্থান নেই। এগুলো মাথাচাড়া দিলেও রুখতে হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। অন্যান্য রাজনীতিকও ধর্মীয় নেতাদের বক্তব্যেও উঠে আসে সহনশীল এক কানাডার প্রতিচ্ছবি।

এ ঘটনায় গাড়িচালক নাথানিয়েল ভেল্টম্যানকে আটক করা হয়েছে। ২০ বছর বয়সী নাথানিয়েলের বিরুদ্ধে চার জনকে হত্যা ও একজনকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ আনা হয় এবং বিচারে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এখন চূড়ান্ত রায় ঘোষণার অপেক্ষা।

গত কয়েক বছরের ন্যায় এ বছরও মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার ওই মুসলিম পরিবারটিকে স্মরণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার আরো অনেকের সঙ্গে স্মরণানুষ্ঠানে যোগ দেন কানাডার ইসলামবিদ্বেষ মোকাবিলা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি আলমিরা এলঘাওয়াবি।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘লন্ডন ফ্রি প্রেস’কে তিনি বলেছেন, ‘যেখানে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে, সেই লন্ডনের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছ থেকে আমরা যা শুনেছি তা হলো তারা খুবই আশাবাদী। ঘৃণা-বিদ্বেষ আমাদের সকলকে কষ্ট দেয় তা এখন সবাই বুঝতে পারছে। যার ফলে ক্রমশ বেশি সংখ্যক মানুষ কানাডার মুসলিমদের পাশে দাঁড়াতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।’