বাসস
  ০৭ জুন ২০২৫, ১৪:০৮

ভুল করে নির্বাসিত সালভাদরান অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গ্রেপ্তার  

ঢাকা, ৭ জুন, ২০২৫ (বাসস): মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কঠোর অভিবাসন নীতি বিতর্কের কেন্দ্রে থাকা সালভাদরের অভিবাসী কিলমার আর্মান্দো আব্রেগো গার্সিয়াকে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পরে তাকে মানব পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।

ওয়াশিংটন থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

অ্যাটর্নি জেনারেল পাম বন্ডি জানান, আব্রেগো গার্সিয়াকে এল সালভাদর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে অবৈধ অভিবাসী পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আব্রেগো গার্সিয়াকে ন্যায়বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাষ্ট্রে আনা হয়েছে।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট মার্চ মাসে ভুলভাবে বিতাড়িত এই অভিবাসীকে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। তাকে এল সালভাদরের একটি কুখ্যাত কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

তবে বন্ডি দাবি করেন, গার্সিয়ার প্রত্যাবাসন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ নয়, বরং সালভাদর সরকারের কাছে পাঠানো গ্রেফতারি পরোয়ানার ভিত্তিতে হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘আমরা সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলেকে ধন্যবাদ জানাই, যিনি তাঁকে ফিরিয়ে দিয়ে গুরুতর অপরাধের বিচারের সুযোগ করে দিয়েছেন।’

বুকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ দেওয়া পোস্টে বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরোধে যেকোনো গ্যাং সদস্যকে বিচারের জন্য ফেরত দিতে আমরা আগ্রহী।

শুক্রবার ট্রাম্পও সাংবাদিকদের বলেন, ‘আব্রেগো গার্সিয়া খুব খারাপ লোক। তাকে ফিরিয়ে আনারই দরকার ছিল না।’

এদিকে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি অ্যাবিগেল জ্যাকসন বলেছেন, আব্রেগো গার্সিয়ার ফিরে আসার বিষয়টি তার আগের বিতাড়নের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

এক্স-এ দেওয়া তিনি বলেন, ‘কোনো ভুল হয়নি। সে ফিরেছে কারণ নতুন তদন্তে এমন ভয়াবহ অপরাধের তথ্য পাওয়া গেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রেই সংঘটিত হয়েছে। আর সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ বিচার কেবল আমেরিকার বিচার ব্যবস্থাই করতে পারে।’

২৯ বছর বয়সী গার্সিয়া যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেরিল্যান্ডে বসবাস করতেন। ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে তাকে ভেনেজুয়েলার ‘ত্রেন দে আরাগুয়া’ গ্যাংয়ের সদস্য সন্দেহে প্রায় ২শ অভিবাসীর সঙ্গে সালভাদরের কারাগারে পাঠানো হয়। এই গ্যাংটিকে ট্রাম্প প্রশাসন বিদেশী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।
পরবর্তীতে মার্কিন বিচার বিভাগ স্বীকার করে, আব্রেগো গার্সিয়া এক মার্কিন নাগরিকের স্বামী, তাকে প্রশাসনিক ভুলের কারণে বিতাড়িত করা হয়। 

গার্সিয়ার আইনজীবী সাইমন সান্দোভাল-মোশেনবার্গ বলেন, ‘সরকার তাকে তাদের ভুল সংশোধনের জন্য ফেরত আনেনি, বরং অভিযুক্ত করতে এনেছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ন্যায়বিচার মানে হলো শাস্তি দেওয়ার আগে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ। এটি ন্যায়বিচার নয় বরং ক্ষমতার অপব্যবহার।

যদিও মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল বন্ডির দাবি, আব্রেগো গার্সিয়া নারী ও শিশুসহ অভিবাসীদের পাচারে জড়িত এবং সালভাদরের গ্যাং এমএস ১৩-এর সদস্যদের যুক্তরাষ্ট্রে আনার কাজ করতেন। 

টেনেসির গ্র্যান্ড জুরির মাধ্যমে গার্সিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। সাজা শেষে তাকে সালভাদরে ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান বন্ডি।

অভিযোগপত্র অনুযায়ী, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত আব্রেগো গার্সিয়া গুয়াতেমালা, এল সালভাদর, হন্ডুরাসসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অবৈধ অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেন।