শিরোনাম
ঢাকা, ৭ জুন, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে আন্তর্জাতিক কর্মীদের একটি জোটের পরিচালিত একটি নৌযান গ্রীসের ক্রীট দ্বীপের কাছে ভূমধ্যসাগর থেকে কয়েকজন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির একটি সহায়তা গোষ্ঠী।
ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের উদ্যোগে পরিচালিত ম্যাডলিন নামের নৌযানটির বরাত দিয়ে এথেন্স থেকে এএফপি জানায়, ভূমধ্যসাগর থেকে একটি বিপদ সংকেত পাওয়ার পর এটি ক্রীট উপকূলের কাছে পথ পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়।
‘গাজা অভিমুখে যাত্রারত ১২ সদস্যবিশিষ্ট শান্তিপূর্ণ কর্মীদের দল’ নিয়ে ম্যাডলিন রওনা দিয়েছে ‘ইসরাইল রাষ্ট্র কর্তৃক ফিলিস্তিনের ওপর আরোপিত অবরোধ ভাঙার লক্ষ্যে’, বলে জানিয়েছে গ্রিসভিত্তিক মার্চ টু গাজা গোষ্ঠী।
তারা জানায়, ‘ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা যায়, একটি নৌকা ডুবে যাচ্ছিল, যাতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন যাত্রী ছিল।’
এই সময় ম্যাডলিনের কাছে আরেকটি জাহাজ আসে, যা শুরুতে নিজেকে মিশরীয় বলে পরিচয় দেয়।
‘তবে ম্যাডলিনে থাকা কর্মীরা দ্রুত বুঝতে পারেন, এটি ভুল পরিচয় এবং আসলে এটি একটি লিবীয় কোস্টগার্ড জাহাজ’, তারা জানায়।
‘লিবিয়াকে নিরাপদ দেশ হিসেবে গণ্য করা হয় না, এ কারণে কিছু শরণার্থী সেখানেই ফেরত পাঠানোর আশঙ্কায় পানিতে ঝাঁপ দেন।’
‘ম্যাডলিন চারজন সুদানী নাগরিককে উদ্ধার করে, যারা সাগরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন, এবং তাদের নৌযানে তুলে নেয়।’
বহু ঘণ্টা ধরে সাহায্যের আহ্বান জানানোর পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা ফ্রন্টেক্স-এর একটি জাহাজ এসে তাদের উদ্ধার করে বলে জানায় গ্রুপটি।
ম্যাডলিন রোববার সিসিলি থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। নৌযানে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে সুপরিচিত জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গও রয়েছেন।
২০১০ সালে যাত্রা শুরু করা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন একটি অহিংস আন্তর্জাতিক আন্দোলন, যা ফিলিস্তিনিদের সমর্থন করে। এই আন্দোলন মানবিক সহায়তা ও ইসরাইলি অবরোধের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিবাদকে একত্রিত করেছে।
ইসরাইলের দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে চরম মানবিক সংকটের কারণে দেশটি ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
২ মার্চ গাজায় সব ধরনের সহায়তা প্রবেশ বন্ধ করে দেয় ইসরাইল। জাতিসংঘ ৩০ মে সতর্ক করে জানায়, গাজা উপত্যকার ২০ লাখের বেশি বাসিন্দা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাস ইসরাইলে হামলা চালায়। ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এএফপি’র হিসাব অনুযায়ী, এতে ১,২১৮ জন নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাাগরিক।
হামাস যোদ্ধারা ২৫১ জনকে জিম্মি করেছিল, যাদের মধ্যে ৫৫ জন এখনো গাজায় রয়েছেন, এবং ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ভাষ্য অনুযায়ী, তাদের মধ্যে ৩২ জন মারা গেছেন।
২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাস-শাসিত গাজায় ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৪,৬৭৭ জন নিহত হয়েছে, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক বলে গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
জাতিসংঘ গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানকে নির্ভরযোগ্য বলে বিবেচনা করে।
গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।