বাসস
  ০৬ জুন ২০২৫, ০৯:৪৮
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৫, ০৯:৪৯

গাজায় ইসরাইলি হামলায় ৩৭ জন নিহত; সহায়তা কেন্দ্রগুলো পুনরায় খুলে দিয়েছে

ঢাকা, ৬ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ইসরাইলি হামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত হয়েছে। এদিকে মার্কিন-সমর্থিত একটি সাহায্যকারী দল জানিয়েছে, তারা একদিনের বিরতির পর পুনরায় কার্যক্রম শুরু করেছে। গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা একথা জানিয়েছে।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী হামাসকে পরাজিত করার প্রচেষ্টা হিসাবে সম্প্রতি গাজায় তাদের অভিযান জোরদার করেছে। স্বাধীনতাকামী হামাসের ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালের হামলা যুদ্ধের সূত্রপাত করেছিল।

কিন্তু ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা দা সিলভা বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সংঘাত বর্ণনা করার পরিবর্তে ‘যুদ্ধ’ শব্দটি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি ইসরাইলকে ‘পূর্বপরিকল্পিত গণহত্যা’ চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেছেন। 

গাজা সিটি থেকে এএফপি এ খবর জানায়।

গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুগাইর বলেছেন, ‘গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন’।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এএফপি’র মন্তব্যের জবাব দেয়নি।

ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির আহ্বান বারবার উঠেছে, কিন্তু মার্চ মাসে শেষ সংক্ষিপ্ত যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে উভয় পক্ষের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।

ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা বলেছেন, ‘গাজায় যা ঘটছে তা যুদ্ধ নয়। এটি একটি অত্যন্ত পূর্বপরিকল্পিত সেনাবাহিনী কর্তৃক নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানো হচ্ছে।’ 

তিনি আরো বলেছেন, ‘এটি আর মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’ 

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ নিজেও যুদ্ধ বা সংঘাত শব্দটি ব্যবহার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

লুলার সাথে যৌথভাবে ‘আমেরিকানদের সাথে সমন্বয় করে যুদ্ধবিরতি অর্জনের জন্য চাপ বৃদ্ধি’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ফ্রান্স এই মাসের শেষের দিকে সৌদি আরবের সাথে নিউইয়র্কে ইসরাইল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাতের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের বিষয়ে একটি জাতিসংঘ সম্মেলনের সহ-আয়োজক হওয়ার কথা রয়েছে।

- সাহায্য কেন্দ্রগুলি পুনরায় খোলা -

দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে অবরোধ আরোপের ফলে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেওয়ার পর গাজায় আরো সাহায্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সম্প্রতি তারা অবরোধ শিথিল করেছে এবং দক্ষিণ ও মধ্য গাজার কয়েকটি কেন্দ্রের মাধ্যমে একটি নতুন সাহায্য বিতরণ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের জন্য নবগঠিত মার্কিন-সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের সাথে কাজ করেছে।

কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর থেকে জিএইচএফ জাতিসংঘ এবং বিশ্বের অন্যান্য সদস্যদের সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। 

জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য গোষ্ঠীগুলি জিএইচএফ-এর সাথে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

গাজা থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুসারে, যখন তারা গ্রুপের সাহায্য কেন্দ্রগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিল তিন দিনের মধ্যে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছে। 

জিএইচএফ বুধবার তাদের বিতরণ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দিয়েছে, যাকে তারা কেন্দ্রগুলোর সংস্কার কাজ উন্নত করার জন্য ‘পুনর্গঠন’ বলে অভিহিত করেছে। তবে বলেছে, তারা বৃহস্পতিবার দুটি পুনরায় চালু করেছে।

এএফপি’কে দেওয়া এক ই-মেইলে তারা আরো জানিয়েছে, ‘জিএইচএফ নিশ্চিত করতে পারে যে আমরা আজ বিতরণের জন্য উন্মুক্ত ছিলাম। বৃহস্পতিবার দু’টি স্থানে ১৪ লক্ষ খাবার বিতরণ করা হয়েছে এবং এক সপ্তাহ আগে খোলার পর থেকে ৮৪ লক্ষেরও বেশি খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

গাজার উদ্ধারকারী এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা রাফায় একটি জিএইচএফ কেন্দ্রের কাছে ভয়াবহ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ইসরাইলি সেনাদের জড়িত থাকার কথা জানিয়েছেন।