শিরোনাম
ঢাকা, ৪ জুন, ২০২৫ (বাসস) : সুদানের অবরুদ্ধ শহর এল-ফাশারের দিকে যাওয়ার পথে একটি ত্রাণবাহী গাড়ি বহরের ওপর হামলায় পাঁচজন সাহায্য কর্মী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার জাতিসংঘ একথা জানিয়েছে।
পোর্ট সুদান থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
জাতিসংঘ ২০২৩ সালের এপ্রিলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ৪০ লক্ষ সুদানী সীমান্ত পেরিয়ে পালিয়ে যাওয়াকে ‘বিধ্বংসী মাইলফলক’ ঘোষণা করার পর সংঘাতে বিধ্বস্ত দেশটিতে মানবিক সহায়তার ওপর সর্বশেষ হামলার খবর পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোমবার উত্তর দারফুর রাজ্যের আল-কোমা গ্রামের কাছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি এবং ইউনিসেফ আয়োজিত ১৫ ট্রাকের বহরের ওপর হামলা চালানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলায় গাড়ি বহরের পাঁচজন সদস্য নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া ‘একাধিক ট্রাক পুড়ে গেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ মানবিক সরবরাহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’।
সেনাবাহিনীর সাথে নিয়মিত যুদ্ধরত আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি এলাকায় সংঘটিত হামলার পেছনে কারা জড়িত জাতিসংঘের সংস্থাগুলো তা চিহ্নিত করতে পারেনি।
যুদ্ধরত দুই পক্ষ যাদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ‘ক্ষুধা’কে ব্যবহার এবং সাহায্য লুটপাট বা বাধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে, তারা এই হামলার জন্য পরস্পরকে দোষারোপ করেছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলি জানিয়েছে, যুদ্ধকালীন রাজধানী পোর্ট সুদান থেকে ত্রাণ পরিবহনকারী কনভয়টি প্রায় ১৮শ’ কিলোমিটার (১,১১৮ মাইল) পূর্বে ত্রাণ সরবরাহ করছিল এবং ‘এল-ফাশারে ত্রাণবাহী গাড়ি নিয়ে যাত্রার পরিকল্পনা করছিল তখনই এই হামলার ঘটনা ঘটে।’
তারা আরো জানিয়েছে, ‘স্থলভাগে থাকা পক্ষগুলোকে ট্রাকগুলোর অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছিল।’
সেনা-সমর্থিত সরকার জানিয়েছে, সোমবার আক্রান্ত ট্রাকগুলো র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস-এর ড্রোন দ্বারা টার্গেট করা হয়েছিল।
- ‘সন্ত্রাসে পালিয়ে যাওয়া’ -
যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশটি জাতিসংঘের মতে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটে জর্জরিত, যেখানে শুধুমাত্র উত্তর দারফুর রাজ্যেই দশ লক্ষেরও বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে।
এই যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিহত হয়েছে। ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ উচ্ছেদ হয়েছে এবং ভয়াবহ ক্ষুধা ও বাস্তুচ্যুতির সংকট তৈরি হয়েছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা-ইউএনএইচসিআর মঙ্গলবার জানিয়েছে, সুদানের সীমান্ত পেরিয়ে চার লক্ষ মানুষ পালিয়ে গেছে।
ইউএনএইচসিআরের মুখপাত্র ইউজিন বাইন জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘এটি বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ বাস্তুচ্যুতি সংকটের একটি বিধ্বংসী মাইলফলক।’
‘যদি সংঘাত অব্যাহত থাকে, তাহলে আরো হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে যেতে থাকবে। এরফলে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।’
ইউএনএইচসিআর সুদানের পশ্চিম সীমান্তে প্রতিবেশী শাদে একটি মানবিক বিপর্যয়ের জরুরি অবস্থা বর্ণনা করেছে। প্রতিবেশি এই দেশটিতে উত্তর দারফুরে হামলার ফলে কয়েক লক্ষ মানুষ পালিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, মাত্র এক মাসেরও বেশি সময় ধরে শাদের ওয়াদি ফিরা এবং এননেদি এস্ট প্রদেশে ৬৮,৫৫৬ জন শরণার্থী এসেছেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রতিদিন গড়ে ১৪শ’ জন সীমান্ত অতিক্রম করছেন।