শিরোনাম
ঢাকা, ২৫ মে ২০২৫ (বাসস) : ইরাকের ইতিহাসে কানস উৎসবে প্রথমবার নির্বাচিত নির্মাতা হাসান হাদি শনিবার জিতে নিলেন সেরা অভিষেক চলচ্চিত্রের সম্মানজনক পুরস্কার ক্যামেরা দ’ওর।
জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার সময়কালের পটভূমিতে নির্মিত শৈশবভিত্তিক ছবি দ্য প্রেসিডেন্ট’স কেক-এর জন্য তিনি এ পুরস্কার পান
কান থেকে এএফপি জানায়, এই পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে দেখা যায়, ৯ বছরের লামিয়াকে তার শিক্ষিকা প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের জন্মদিন উপলক্ষে কেক বানানোর দায়িত্ব দেন। এতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আসতে পারে।
সময়টা নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে—দেশটি তখন জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞায় পর্যুদস্ত। খাদ্যসঙ্কটে জর্জরিত লামিয়া ও তার দাদি প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করতে শহরে রওয়ানা হন—যা ছিল তাদের নাগালের বাইরে।
পুরস্কার গ্রহণের সময় হাদি বলেন, ‘যারা যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা বা স্বৈরতন্ত্রের মাঝেও ভালোবাসা, বন্ধুত্ব ও আনন্দ খুঁজে নেয়, সেই সব শিশুদের আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি। তোমরাই সত্যিকারের বীর।’
তিনি পরে ইরানের ভিন্নমতাবলম্বী চলচ্চিত্র নির্মাতা জাফর পানাহির সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করেন, যিনি এবারের উৎসবে তার চলচ্চিত্র ইট ওয়াজ জাস্ট অ্যান অ্যাকসিডেন্টের জন্য পাম দ’ওর জিতেছেন।
ছবিটিতে দেখা যায়, পাঁচজন সাধারণ ইরানি এমন এক ব্যক্তির মুখোমুখি হন, যিনি তাদের জেলে নির্যাতন করেছিলেন।
দ্য প্রেসিডেন্ট’স কেক চলচ্চিত্রটি গত সপ্তাহে ডিরেক্টরস ফোর্টনাইট বিভাগে প্রদর্শনের পর থেকেই দারুণ প্রশংসা পাচ্ছিল। বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র সাময়িকী ভ্যারাইটি একে বলেছে ‘একটি ট্র্যাজিক-কমিক রত্ন’।
ডেডলাইন বলেছে, ‘পাম দ’ওরের দৌড়ে থাকা অনেক ছবির তুলনায় এটি অনেক এগিয়ে’ এবং ধারণা করা হচ্ছিল, এটি হতে পারে ইরাকের প্রথম অস্কার মনোনয়নপ্রাপ্ত চলচ্চিত্র।
ফিলিস্তিনি চলচ্চিত্র
মধ্যপ্রাচ্য থেকে আরও একজন, ফিলিস্তিনি পরিচালক তৌফিক বারহোম তার ছবি আই’ম গ্ল্যাড ইউ’আর ডেড নাও-এর জন্য স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন।
ধন্যবাদ জানানোর পর তিনি গাজা যুদ্ধের প্রসঙ্গ তোলেন।
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ২০ বছর পর যখন আপনারা গাজা সফরে যাবেন, তখন মৃতদের কথা ভুলে গিয়ে সুন্দর একটি ভ্রমণ উপভোগ করবেন।’
এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিতর্ক উসকে দেন গাজার মতো যুদ্ধবিধ্বস্ত ভূখণ্ডকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানোর মন্তব্য করে।
মূল প্রতিযোগিতার বাইরে সারতাঁ রেগার নামের সমান্তরাল বিভাগে শুক্রবার পুরস্কার পেয়েছেন গাজার যমজ ভাই আরব ও টারজান নাসের, তাদের চলচ্চিত্র ওয়ান্স আপন আ টাইম ইন গাজা'র জন্য।
পুরস্কার গ্রহণের সময় এক ভাই বলেন, এই পুরস্কার তিনি উৎসর্গ করছেন ফিলিস্তিনিদের, বিশেষ করে গাজায় অবস্থানরত জনগণের প্রতি। তিনি ও তার ভাই ২০১২ সালে জন্মভূমি ছেড়ে চলে যান।
তিনি জানান, কানসে ফিরে পুরস্কার নিতে তারা দ্বিধায় ছিলেন। তখন তাদের মা বলেছিলেন, ‘না, না, না—তোমাকে যেতে হবে। ওদের বলো, গণহত্যা বন্ধ করো।’
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত মাসে বলেছে, ইসরাইল গাজায় ‘লাইভস্ট্রিমকৃত গণহত্যা’ চালাচ্ছে। ইসরাইল এই অভিযোগকে ‘চরম মিথ্যাচার’ বলেছে।