শিরোনাম
ঢাকা, ২২ মে, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের প্রভাব এবং ইউক্রেনের প্রতি সমর্থনের মতো জটিল বিষয়গুলো নিয়ে বিভক্তি কাটিয়ে উঠার বিষয়ে বুধবার জি৭ গ্রুপটির অর্থমন্ত্রীদের মধ্যে আলোচনা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।
ব্যানফ থেকে এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার আলোচনা শেষ হওয়ার কথা থাকলেও, ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির ওপর উত্তেজনা অব্যাহত থাকায়, সাতটি উন্নত অর্থনীতির এই গ্রুপের মধ্যে ঐক্য প্রতিফলিত করে একটি চূড়ান্ত বিবৃতির আশা অনিশ্চিত রয়ে যায়।
পশ্চিম কানাডার ব্যানফ ন্যাশনাল পার্কের একটি হোটেলে তুষারাবৃত পাহাড়ের সামনে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং গ্রুপ ফটোর মাধ্যমে দিনটি শুরু হয়।
কিন্তু বৈঠক শুরু হওয়ার পরপরই ব্রিটেন, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে গঠিত গ্রুপটির মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।
ইতালির অর্থমন্ত্রী জিয়ানকার্লো জিওরগেটি বলেন, আলোচনার শুরুতে ‘কিছু অসুবিধা দেখা দেয়’। তবে তিনি বলেন, গ্রুপটি ‘ এই পার্থক্যগুলো কাটিয়ে উঠতে সক্ষম। জি৭ ঐক্যের প্রতিফলনকারী একটি চূড়ান্ত বিবৃতিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বুধবারের আলোচনা থেকে খুব কম সুনির্দিষ্ট তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখি হবেন বলে মনো করা হচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপ বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধীর করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
বেসেন্ট বুধবারের আলোচনাকে ‘খুবই ফলপ্রসূ’ বলে বর্ণনা করেছেন।
বৈঠকের আয়োজক, কানাডার অর্থমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেন, বেসেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষীয় বৈঠকে শুল্কের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন কিনা তা জানাতে অস্বীকৃতি জানান। তবে জোর দিয়ে বলেছেন যে, তারা ‘ভালোভাবেই মিলেছেন’।
আলোচনায় দ্বন্দ্ব প্রশ্নে শ্যাম্পেন বলেন, ‘এজন্যই আমাদের বৈঠক হয়, খোলামেলা আলোচনা হয়।’ শ্যাম্পেন সাংবাদিকদের কাছে আলোচনার অগ্রগতি ও জি৭ এর ঐক্যের অনুভূতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
জাপানের অর্থমন্ত্রী কাতসুনোবু কাতো সাংবাদিকদের বলেন, বেসেন্টের সাথে তার বৈঠকে তিনি নিশ্চিত করেছেন যে মার্কিন শুল্ক ‘অত্যন্ত দুঃখজনক’ এবং ‘বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতা সামঞ্জস্য করার জন্য সব সময় উপযুক্ত ব্যবস্থা না।’
মঙ্গলবার ব্যানফে ইউক্রেনের অর্থমন্ত্রী সের্গেই মার্চেনকোর উপস্থিতি ‘বিশ্বের কাছে একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠায়’ যে সদস্যরা রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে দেশটিকে সমর্থন করার জন্য পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হচ্ছে।
বুধবার মার্চেনকোর সাথে ইউক্রেন সম্পর্কিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী র্যাচেল রিভস। তিনি বলেন, ‘রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রের উপর চাপ এখন আগের চেয়েও বেশি প্রয়োজন।’
ইউক্রেন সম্পর্কিত বৈঠকের পরে মার্চেনকো সাংবাদিকদের ব্রিফ করেননি।
তবে মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি সমাবেশের সময় রাশিয়ার উপর আরও চাপ প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে ইউক্রেনের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করার চেষ্টা করবেন।
ওয়াশিংটন-ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক আটলান্টিক কাউন্সিলের একজন উপ-পরিচালক অনন্যা কুমার বলেন ,‘অস্তিত্বের দিক থেকে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জি৭।’
সমাবেশের আগে তিনি এএফপিকে বলেন, ‘আমি মনে করি না গত ১০০ দিনে অন্যান্য জি৭ সদস্য রাষ্ট্রের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে মানুষ যতটা প্রশ্ন তুলেছে, গত কোনও বছরেই তা হয়নি।’ ‘বড় প্রতিপাদ্য হবে কীভাবে আমরা বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীলতা রোধ করব, কীভাবে আমরা এই বিশৃঙ্খলার মধ্যে ঐক্যমত্য খুঁজে পাব?’
এই সপ্তাহের বৈঠকটি আগামী মাসে ব্যানফের কাছে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জি৭ শীর্ষ সম্মেলনের আগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে ট্রাম্পের যোগদানের আশা করা হচ্ছে।