শিরোনাম
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ফার্নান্দো কলার ডি মেলোকে শুক্রবার গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের দায়ে প্রায় নয় বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। এটি সাবেক নেতার কারাদণ্ডের মুখোমুখি হওয়ার সর্বশেষ ঘটনা।
ব্রাসিলিয়া থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
কয়েক দশক ধরে স্বৈরশাসনের পর ব্রাজিলের প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট কলার ডি মেলো। ১৯৯২ সালে তার বিরুদ্ধে কংগ্রেস ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরু করার পর তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
দুই দশক পরে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই তদন্ত ছিল ‘কার ওয়াশ’ দুর্নীতি কেলেঙ্কারি অভিযানের অংশ।
একটি ফেডারেল পুলিশ সূত্র এএফপি’কে জানায়, ৭৫ বছর বয়সী কলার ডি মেলোকে উত্তর-পূর্ব আলাগোয়াস রাজ্যের ম্যাসিও নগরীতে আটক করা হয়, যেখানে তিনি একজন সিনেটর ও গভর্নর হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন।
কলার ডি মেলোকে ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে একজন সিনেটর থাকাকালীন একটি নির্মাণ কোম্পানি ও ব্রাজিলের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোব্রাসের একটি সাবেক সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ‘অনিয়মিত চুক্তি সম্পাদন’ করার জন্য ২০ মিলিয়ন রিয়েল (৩.৫ মিলিয়ন ডলার) ঘুষ নেওয়ার দায়ে ২০২৩ সালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
বৃহস্পতিবার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আলেকজান্দ্রে ডি মোরেস গ্রেফতারের আদেশ বাতিল করার জন্য কলার ডি মেলোর পক্ষে সর্বশেষ প্রচেষ্টা প্রত্যাখ্যান করেন।
তার আইনজীবীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, আত্মসমর্পণের জন্য রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় যাওয়ার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়।
মোরেস তাকে ম্যাসিওর বালডোমেরো ক্যাভালকান্টি দ্য অলিভেইরা কারাগারের একটি ‘বিশেষ শাখায়’ পৃথক কক্ষে বন্দী রাখার আদেশ দেন।
তার আইনজীবীরা বলেছেন, তারা তাকে গৃহবন্দী অবস্থায় সাজা ভোগ করার অনুমতি চাইবেন।
কলার ডি মেলোই ব্রাজিলের প্রথম প্রেসিডেন্ট নন, যিনি আইন লঙ্ঘন করেছেন।
এরআগে ১৯৬৪-১৯৮৫ সালের সামরিক একনায়কতন্ত্রের পর থেকে দেশটির নেতৃত্বদানকারী সাত ব্যক্তির মধ্যে চারজনকে হয় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে অথবা অভিশংসিত করা হয়েছে।
২০২২ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর কথিত অভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হওয়ার অভিযোগে কট্টর-ডানপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর বিরুদ্ধে সর্বশেষ মামলায় বিচারের মুখোমুখি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই সপ্তাহে তার অন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন, একজন আদালতের কর্মকর্তা ৭০ বছর বয়সী এই রাজনীতিককে তার প্রাথমিক আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য পাঁচ দিনের সমন জারি করেন।
‘কার ওয়াস’ তদন্তের ফলাফল-
২০০৩ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকারী ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট লুইস ইনাসিও লুলা ডি সিলভাসহ ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের কয়েক ডজন শীর্ষ ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ ‘কার ওয়াস’ মেগা-তদন্তে আটক ছিলেন।
ওই তদন্তে বৃহৎ নির্মাণ সংস্থাগুলোর বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদদের ঘুষ প্রদানের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক উন্মোচিত হয়েছে, যাতে তারা বড় বড় গণপূর্তের চুক্তি পেতে পারে।