শিরোনাম
ঢাকা, ২৯ জুন, ২০২৫ (বাসস) : ভারতে এক ব্যক্তিকে শারীরিক নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকের ওপর নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করে উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
শনিবার রাতে প্রেস উইংয়ের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজ ‘সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস’-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ১৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে একজন ব্যক্তিকে উল্টো করে ঝুলিয়ে নির্মমভাবে পেটাতে দেখা যায়।
ভিডিওটির ক্যাপশনে ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেছে এবং ওই ব্যক্তি আওয়ামী লীগ সমর্থক হওয়ায় এমন পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন বলে মিথ্যা দাবি করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, অনেকে এই ভিডিও ব্যবহার করে দেশে গণপিটুনি এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতির সমালোচনা করেছেন। কিন্তু ফ্যাক্টচেক করে দেখা গেছে, এসব দাবি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। কারণ ভিডিওটির সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
ভিডিওটির উৎস শনাক্ত করতে গুগলের রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ফুটেজের কিছু ফ্রেম বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এতে ২০২৫ সালের ২৪ মে ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের সন্ধান পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম: ‘রাজস্থানের বেওয়ারে এক ব্যক্তিকে ঝুলিয়ে নির্যাতন, এ ঘটনায় মামলা দায়ের’।
প্রতিবেদনটি লিখেছেন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রাজস্থান প্রতিনিধি পারুল কূলশ্রেষ্ঠা। তাতে নিশ্চিত করা হয়, ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের রাজস্থানের বেওয়ার এলাকায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তেজপাল সিং উদাওয়াত নামের এক ব্যক্তি ডিজেল চুরির অভিযোগে এক ডাম্পার চালককে বেধড়ক মারধর করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, ভুক্তভোগীকে একটি জেসিবি মেশিনের হুক থেকে উল্টো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে এবং একজন তাকে লাঠি দিয়ে মারছে। আরেকজন তার গায়ে পানি ঢালছে এবং বলা হচ্ছে, ক্ষত স্থানে লবণ দেওয়া হয়েছে।
এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ব্যবহারকারী ভারতীয় নাগরিক ওয়াকার হাসানের অ্যাকাউন্ট থেকেও শেয়ার করা হয়।
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার পর তা নিয়ে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ভারতের একাধিক প্রধান সংবাদমাধ্যম স্বাধীনভাবে ঘটনাটি কাভার করে।
প্রাপ্ত সব তথ্য পর্যালোচনা করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বলেছে, এটি ভারতের রাজস্থানে সংঘটিত সহিংসতার ঘটনা, বাংলাদেশের নয়। অতএব, এই ভিডিওকে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকের ওপর নির্যাতনের প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা নেহায়েত উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার।