শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : রুশ ব্যালের কিংবদন্তি শিল্পী ও বলশই থিয়েটারের তিন দশকের প্রধান কোরিওগ্রাফার ইউরি গ্রিগরোভিচ মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর।
মস্কো থেকে এএফপি জানায়, সোভিয়েত যুগের লেনিনগ্রাদে (বর্তমানে সেন্ট পিটার্সবার্গ) এক ব্যালে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন গ্রিগরোভিচ। নৃত্যশিল্পী হিসেবে শুরু করে পরে কোরিওগ্রাফার হিসেবে তার ক্যারিয়ার বিস্তৃত ছিল প্রায় ৮০ বছর। এর বড় একটি অংশজুড়ে তিনি বলশই থিয়েটারের মূল শিল্প-চালক ছিলেন। বলা হয়, থিয়েটারটি তিনি ‘লোহার শাসনে’ পরিচালনা করতেন।
বলশই থিয়েটার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে ব্যালে জগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ইউরি গ্রিগরোভিচ প্রয়াত হয়েছেন।’
সেন্ট পিটার্সবার্গের মারিনস্কি থিয়েটার, যেখানে তিনি নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন, জানায়, ‘একটি যুগের অবসান ঘটল।’
গ্রিগরোভিচ মূলত ‘দ্য নাটক্র্যাকার’, ‘সোয়ান লেক’ এবং ‘দ্য স্টোন ফ্লাওয়ার’-এর মতো ক্লাসিক ব্যালের মঞ্চায়নের জন্য পরিচিতি পান। বিশেষ করে ‘দ্য স্টোন ফ্লাওয়ার’, যা উরাল অঞ্চলের লোককথার ওপর ভিত্তি করে তৈরি এবং সের্গেই প্রোকোফিয়েভের সঙ্গীত দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটি তার সবচেয়ে প্রশংসিত কাজ।
৭৮ বছর বয়সী খ্যাতনামা কোরিওগ্রাফার বরিস আকিমভ বলেন, ‘আমি গর্বিত যে গ্রিগরোভিচের ছাত্র ছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ‘গ্রিগরোভিচ পুরুষ নৃত্যের ক্ষেত্রে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন, এমন এক সময়ে যখন ব্যালে মূলত নারীনির্ভর ছিল।’
গ্রিগরোভিচের কঠোর নেতৃত্ব নিয়ে সমালোচনা থাকলেও আকিমভ বলেন, ‘তাকে স্বৈরাচারী বলা হয়েছে, কিন্তু একটি দল পরিচালনায় কঠোরতা প্রয়োজন।’
গ্রিগরোভিচ ১৯৮০ সালে মস্কোর গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কোরিওগ্রাফার ছিলেন। এছাড়া তিনি ফরাসি ‘ব্যালে অস্কার’ খ্যাত ‘বেনোয়া দ্য লা দঁস’সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার সভাপতিত্ব করেন।
তবে ১৯৯৫ সালে বলশই থিয়েটার তার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, অভিযোগ ছিল, তার শেষ দশকজুড়ে থিয়েটারটি শিল্পগতভাবে স্থবির হয়ে পড়েছিল। তবে ২০০৮ সালে তিনি কোরিওগ্রাফার হিসেবে বলশইতে ফিরে আসেন এবং তখন থেকেই তার উপস্থিতি বলশই মঞ্চে দৃঢ় ও প্রভাবশালী ছিল।
রুশ-জর্জিয়ান ব্যালে শিল্পী নিকোলাই তসিসকারিদজে এক শোকবার্তায় লেখেন, ‘এ এক যুগের সমাপ্তি, যার অনুপস্থিতিতে অনেক কিছুই হতো না। এটা এক মহত্ত্ব, যা অতিক্রম করা যায় না। এটি এক জীবনের গল্প, যা মনে থাকবে... এক প্রতিভার নাম ইউরি গ্রিগরোভিচ।’