বাসস
  ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:২৬

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে পাইকারি বাজারে কমলো ৫ পণ্যের দাম

দেশের ভোগ্যপণ্যের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ । ছবি : বাসস

চট্টগ্রাম, ৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশের ভোগ্যপণ্যের সর্ববৃহৎ পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে পাঁচ পণ্যের দাম। মসুর, খেসারি ও চিনির কেজিতে ৪ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত কমেছে। অন্যদিকে পাইকারিতে খোলা সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম লিটার প্রতি দুই টাকা কমেছে। তবে, খুচরা বাজারে এর প্রভাব এখনো পড়েনি।

আজ দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ঘুরে জানা যায়, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৭ টাকা কমে মসুর ডাল ৮১ টাকা, কেজিতে ১২ টাকা কমে খেসারি ডাল ৭৫ ও চিনির কেজিতে ৪ টাকা কমে ৯১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি একই সময়ের ব্যবধানে লিটারে ২ টাকা ৪৩ পয়সা কমে খোলা সয়াবিন তেল ১৫৯ টাকা ১৬ পয়সা ও লিটারে ১ টাকা ৯২ পয়সা কমে পাম অয়েল ১৪৫ টাকা ১৭ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক মো. মহিউদ্দিন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্ধিত মাশুলের প্রভাব এখনো খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের বাজারে পড়েনি। সবকিছু এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ ভালো, দামও কমতির দিকে রয়েছে। তবে, সরকার মাশুল যদি স্থগিত না করে, তাহলে আগামী রমজানে ভোগ্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

পাইকারিতে দাম কমলেও গতকাল খুচরায় আগের দামে বিক্রি হয়েছে এসব পণ্য। দুই সপ্তাহ আগে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মসুর ডাল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, খেসারি ডাল ১০০ টাকা, চিনি ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা ও পাম অয়েল ১৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আজও একই দামে বিক্রি হচ্ছে।
 
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক ফয়েজ উল্যাহ বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা আমাদের সীমিত জনবল নিয়ে যতটা সম্ভব আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি। অপরাধ প্রমাণ হলে আইন প্রয়োগ করছি।’

তবে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা বেড়েছে। গতকাল কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকায়। ভোক্তা পর্যায়েও তিন সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে পণ্যটি বিক্রি হয় ১১০ টাকায়। সরবরাহ সংকটের কারণে পণ্যটির দাম বেড়েছে জানিয়েছেন পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা।

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস বলেন, ডিসেম্বরে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আসবে। তার আগে পণ্যটির দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে অন্তত এক মাসের জন্য হলেও পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া উচিত।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘বাজারে তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে না। তাই ব্যবসায়ীরা যে যার মতো করে দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি করছেন। একবার কোনো পণ্যের দাম বাড়লে সেটি আর কমে না। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি দূর হবে না।’

এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১৫ টাকা কমে গতকাল ১৬৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোনালি মুরগি ৩৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৯৫০ টাকায় ও খাসির মাংস ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিমে ৫ টাকা কমে বিক্রি হয় ১৩০ টাকায়।

তবে শীতের সবজি বাজারে আসায় দুই সপ্তাহ ধরে দাম কমতে শুরু করেছে। আজ নগরীর অন্যতম পাইকারি সবজির আড়ৎ রিয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ফুলকপি ৮০ টাকা, মূলা ও কাঁচা পেঁপে ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৬৫, ঝিঙা ও চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০, মিষ্টি কুমড়া ও লাউ ৪০, গাজর ১২০, করলা, কাঁকরোল, ঢেঁড়স, বরবটি, কচুরলতি ও পটল ৬০, শিম ৬০ থেকে ৭০, কাঁচা মরিচ ১২০ ও টমেটো ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মাছের মধ্যে প্রতি কেজি পোয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, কোরাল ৭০০, বাগদা চিংড়ি ৮৫০ থেকে ৯০০, রুই ও কাতলা ৩৫০ থেকে ৪৫০, লইট্যা ১৮০ থেকে ২০০, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০, রূপচাঁদা ৮৫০, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০, তেলাপিয়া ও সিলভার কার্প ২৫০, টেংরা ৮০০, নাইলোটিকা ২২০ ও পুঁটিমাছ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

অন্যদিকে মুদি দোকানে প্যাকেট ময়দা (দুই কেজি) ১৪০ টাকা, প্যাকেট আটা (দুই কেজি) ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।