শিরোনাম
ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে এক অনুষ্ঠানে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বৃহত্তর অর্থনৈতিক সংহতি ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা ।
তারা বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় অপার সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য এখনও অনেক কম। এ ছাড়া ভূ-রাজনৈতিক কারণ, পারস্পরিক অবিশ্বাস, এবং শুল্ক-বহির্ভূত বাধা বা নন-ট্যারিফ ব্যারিয়ারের মতো প্রতিবন্ধকতার কারণে সার্ক তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারেনি।
আজ বৃহস্পতিবার নগরীর বসুন্ধরায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে চার দিনব্যাপী ‘সাউথ এশিয়া ট্রেড ফেয়ার-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তারা এ সব কথা বলেন।
ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এবিসিসিআই), বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সহায়তায় সার্ক চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসসিসিআই) এই মেলার আয়োজন করেছে। মেলায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ, এসসিসি সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর।
বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সার্ক অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের একে অপরের সাথে ধারণা ও জ্ঞান বিনিময়ের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা আপনাদের ধারণাগুলো অন্যদের সাথে ভাগ করে নিতে পারেন। আমরা বিভিন্ন দেশের বিশেষ করে বেসরকারি খাতে সর্বোত্তম বিষয়গুলো একে অপরের সাথে ভাগ করে নিতে পারি। এর মাধ্যমে আমরা একসাথে আরও বেশি বিনিয়োগ, ব্যবসা এবং নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারব।’
এই অঞ্চলকে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের একটি বৈশ্বিক ক্ষেত্র হিসেবে উল্লেখ এই মেলা পারস্পরিক সমৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে সফল হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে মোহাম্মদ হাসান আরিফ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘দুবাই, লন্ডন, নিউইয়র্ক এবং টোকিওর মতো তৃতীয় দেশে যৌথভাবে ‘মেড ইন সাউথ এশিয়া’ মেলার আয়োজন করার প্রস্তাব দেন, যাতে এই অঞ্চলের পণ্যগুলো বিশ্বব্যাপী তুলে ধরা যায়।’
এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, সার্কের মূল লক্ষ্য ছিল ইইউ এবং আসিয়ানের মতো আঞ্চলিক সংহতি অর্জন করা। কিন্তু ভূ-রাজনৈতিক কারণ এবং পারস্পরিক আস্থার অভাবে এটি তার পূর্ণ সম্ভাবনা অর্জন করতে পারেনি।
মেলায় অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, এই ধরনের আয়োজনে শুধু পণ্য নয়, বরং ধারণা, উদ্ভাবন এবং একটি সমৃদ্ধ সার্কের জন্য অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করাও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি আরও বলেন, এই মেলায় তৈরি পোশাক, গয়না, প্রসাধনী, চামড়াজাত পণ্য, গৃহস্থালি সামগ্রী, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং ইলেকট্রনিক্সসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে এই মেলা আঞ্চলিক যোগাযোগ জোরদার করতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
মেলার কার্যক্রমের মধ্যে বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশন, ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং এবং উদ্যোক্তাদের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও জ্ঞান বিনিময়ের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আজ শুরু হয়ে আগামী রোববার পর্যন্ত চলা এই মেলা প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।