শিরোনাম
ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): বাংলাদেশে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের অনাবাসিক হাইকমিশনার ডেরেক লোহ ইউ সে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)-এর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বুধবার উত্তরার বিজিএমইএ কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় লোহের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মিচেল লিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ, সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনা ও সরবরাহ উন্নয়ন কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া, পোশাক শিল্পে শ্রম সমস্যা, মার্কিন শুল্ক ও পোশাক খাতের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যান্য সমসাময়িক বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসে।
বিজিএমইএ’র এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের পরিচালক রুমানা রশিদ। আলোচনার অন্যতম প্রধান বিষয় ছিল বাংলাদেশের বন্দর ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুরের সহযোগিতা।
হাইকমিশনার ডেরেক লোহ চট্টগ্রামের বে টার্মিনাল ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, কনটেইনার পরিবহন ব্যবস্থাপনায় সিঙ্গাপুর বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তাদের রয়েছে বিপুল অভিজ্ঞতা, আধুনিক প্রযুক্তি ও উন্নত দক্ষতা। এসব সক্ষমতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে লজিস্টিকস ও বন্দর ব্যবস্থাপনা উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখতে চায় সিঙ্গাপুর।
তিনি বিজিএমইএ’র কাছে জানতে চান কীভাবে বন্দর দক্ষতা বাড়ানো যায়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, এমন সহযোগিতা চাই যা বন্দরে পণ্য খালাসের সময় কমাবে, শিপিং প্রক্রিয়া দ্রুত হবে এবং আমদানি-রপ্তানির মোট ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে।
হাইকমিশনার জানান, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে তিনি বাংলাদেশের বর্তমান ব্যবসা ও বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চান।
বিজিএমইএ সভাপতি জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের অগ্রগতির কথা তুলে ধরে বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নানা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে ব্যবসার খরচ কমানো, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে।
তিনি হাইকমিশনারকে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে বিনিয়োগের জন্য সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করতে অনুরোধ করেন। এফটিএ ছাড়াও তিনি সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের হাসপাতাল নির্মাণের মতো খাতে বিনিয়োগের পরামর্শও দেন।
হাইকমিশনার বলেন, বিনিয়োগ আনতে হলে শতভাগ মুনাফা দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এ নিশ্চয়তাই সবচেয়ে জরুরি বলে তিনি গুরুত্বারোপ করেন।
বিজিএমইএ সভাপতি সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের কৃষিপণ্য ও ফলমূল রপ্তানির সুযোগ তৈরিতে হাইকমিশনের সহায়তা কামনা করেন।
এছাড়া সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি সম্প্রসারণ নিয়েও আলোচনা হয়। হাইকমিশনার বিজিএমইএ নেতাদের উচ্চমূল্যের পোশাক, বিশেষ করে প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের পোশাক উৎপাদনে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি বিজিএমইএ সভাপতিকে একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে সিঙ্গাপুর সফরে এসে দেশটির বন্দর পরিচালনা ব্যবস্থা সরেজমিনে দেখার আমন্ত্রণ জানান।