শিরোনাম
ঢাকা, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড) বুধবার চলতি বছরে প্রথমবারের মতো সুদের হার কমিয়েছে। ধীরগতির চাকরি ও কর্মসংস্থানের ঝুঁকি বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের চাপের মধ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
ফেড ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ঋণের মানদণ্ড সুদহার ৪.০ থেকে ৪.২৫ শতাংশ সীমার মধ্যে নির্ধারণ করেছে। এ বছর আরও দুটি সুদহার কমানোর ইঙ্গিতও দিয়েছে।
ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাজনৈতিক প্রভাব থেকে স্বাধীনতা বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
তবে তিনি স্বীকার করেন যে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতি, মুদ্রাস্ফীতি ও শ্রমবাজারে কেমন প্রভাব ফেলছে, তা পর্যবেক্ষণ করেই নয় মাস পর সুদহার কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনে দায়িত্ব পালনকারী নতুন ফেড গভর্নর স্টিফেন মিরান বুধবারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। তিনি ৫০ বেসিস পয়েন্টের বৃহত্তর হার হ্রাসের পক্ষে ছিলেন।
হার নির্ধারণকারী ফেডারেল ওপেন মার্কেট কমিটির অন্য ১১ জন ভোটার সদস্য কোয়ার্টার পয়েন্ট হ্রাসকে সমর্থন করেছেন।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক রায়ান চাহরুর বলেন, ফেড কর্মকর্তারা বোঝাতে চান যে রাজনৈতিক কারণে নয়, অর্থনৈতিক কারণেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অক্সফোর্ড ইকোনমিকসের অর্থনীতিবিদ মাইকেল পিয়ার্স বলেন, ভবিষ্যৎ সুদহার নিয়ে ফেড কর্মকর্তাদের মধ্যে একটি ‘তীব্র বিভাজন’ দেখা যাচ্ছে। ১৯ জন কর্মকর্তার মধ্যে সাত জন এ বছর আর কোনো সুদের হার কমাতে চান না। তবে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই দফা কমানোর পক্ষে।
ফেড জানিয়েছে, কর্মসংস্থানের ঝুঁকি বাড়ছে, যদিও মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা উঁচুতে রয়ে গেছে। চাকরির প্রবৃদ্ধি কমে এসেছে এবং বেকারত্বের হারও সামান্য বেড়েছে।
নেভি ফেডারেল ক্রেডিট ইউনিয়নের প্রধান অর্থনীতিবিদ হিদার লং বলেন, এ মুহূর্তে বড় ঝুঁকি হচ্ছে আরও বেশি আমেরিকান চাকরি হারাতে পারে। যা মন্দার দিকে অর্থনীতিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে।
ফেড তার ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস ১.৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১.৬ শতাংশ করেছে। তবে বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতির পূর্বাভাস অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
অর্থনৈতিক উদ্বেগের বাইরে রাজনৈতিক চাপও বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বারবার বড় হারে সুদ কমানোর আহ্বান জানাচ্ছেন এবং ফেডের স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন।
ফেড গভর্নর লিসা কুককে বরখাস্তের ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ আদালতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
আইওয়াই প্রধান অর্থনীতিবিদ গ্রেগরি ডাকো বলেন, ইতিহাসে দেখা গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রাজনৈতিক প্রভাবে থাকলে অর্থনৈতিক ফলাফল নেতিবাচক হয়। এতে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে, প্রবৃদ্ধি কমতে পারে ও আর্থিক বাজারে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে।