বাসস
  ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:২৭

অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরে আশাবাদী জাপানি রাষ্ট্রদূত

আজ ডিসিসিআই-এর সভাপতি তাসকীন আহমেদ এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচির মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি : ডিসিসিআই

ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)-এর সভাপতি তাসকীন আহমেদ এবং বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত সাইদা শিনিচির মধ্যে মঙ্গলবার একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডিসিসিআই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রাজধানীর গুলশানে ডিসিসিআই সেন্টারে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। 

তবে এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে শিল্প কাঠামোর বহুমুখীকরণ এবং জনসেবায় দক্ষতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের দেশীয় বাজার ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিদ্যমান বিনিয়োগ সুযোগ-সুবিধার কারণে জাপানি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ এখানে আরো বাড়বে বলে আশা করা যায়।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের দক্ষ তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা জাপানের উন্নত প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা করতে পারে, যা উভয় দেশের জন্য পারস্পরিক সুফল বয়ে আনবে।

তিনি জানান, সম্প্রতি টোকিওতে বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ)-এর সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং উভয় পক্ষই দ্রুত এই চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। এই অংশীদারিত্ব উভয় দেশের অর্থনীতির জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ বলেন, জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের অংশীদারিত্ব রয়েছে এবং অবকাঠামো উন্নয়ন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগে জাপানের অবদান অনস্বীকার্য।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-জাপান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩.১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে আমদানি ১.৮১ বিলিয়ন এবং রপ্তানি ১.৩১ বিলিয়ন ডলার। জাপান বাংলাদেশের ১২তম বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য, ৯ম বৃহত্তম আমদানির উৎস এবং প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) মজুদের ১১তম বৃহত্তম উৎস।

ডিসিসিআই সভাপতি আরো জানান, জাপানি উদ্যোক্তারা এখন পর্যন্ত সার, নির্মাণ, টেক্সটাইল, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পেট্রোলিয়ামসহ বিভিন্ন খাতে ৫০৭.১৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। জাপানের বৈশ্বিক মোট বিদেশি বিনিয়োগ ১৮৪.০২ বিলিয়ন ডলার।

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশ নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। তাসকীন আহমেদ এসব সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগাতে জাপানি উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান।

তিনি বিশেষভাবে অটোমোবাইল, যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, কৃষি-লজিস্টিকস, পাট ও জুতা শিল্প, তথ্য-প্রযুক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন, লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা ও দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে জাপানের প্রযুক্তিগত সহায়তা কামনা করেন।

বিশেষ করে তিনি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) খাতকে জাপানের সহায়তার আহ্বান জানান, যাতে এই খাত এর পূর্ণ সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ করতে পারে।

বৈঠকে ডিসিসিআই-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি রাজীব এইচ চৌধুরী এবং সহ-সভাপতি মো. সালিম সোলায়মানও উপস্থিত ছিলেন।