বাসস
  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৪৪

টাস্কফোর্সের সভা : শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে চামড়া শিল্প কর্তৃপক্ষ নামে নতুন কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব

ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ (বাসস) : শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে চামড়া শিল্প কর্তৃপক্ষ (লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অথরিটি) নামে নতুন একটি সংস্থা গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। 
আজ বৃহস্পতিবার চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের এক সভায় এ প্রস্তাব করা হয়। 
চামড়া শিল্পের বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমধানের মাধ্যমে এ শিল্প-খাতের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যেই টাস্কফোর্সের সদস্যরা লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অথরিটি (এলআইএ) নামে নতুন কতৃপক্ষ গঠনের ওপর গুরুত্ব দেন। 
রাজধানীর মতিঝিলস্থ শিল্প ভবনের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুষ্ঠিত এ সভায় টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ও শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন সভাপতিত্ব করেন। এটি ছিল, চামড়া শিল্পখাতের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ণে গঠিত টাস্কফোর্সের ৪র্থ সভা। খবর সংবাদ বিজ্ঞপ্তির।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিক’র চেয়ারম্যান মোশতাক হাসান, রাজউকের চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী,  পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিন, ট্যানারি শিল্পের সাথে জড়িত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়/দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, চামড়া শিল্পখাত একটি বৃহৎ খাত। চামড়া রপ্তানির জন্য বিদেশে নতুন বাজার খোঁজার পাশাপাশি চামড়া-ব্যবসায়ীদের ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্যও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি বলেন, এজন্য সরকার সবরকম সহযোগিতা করবে। 
সভায় গত ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় সাভারের চামড়া শিল্পনগরী বন্ধের সুপারিশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে ট্যানারি কারখানাগুলো সাভারে নির্মাণাধীন চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তর করা হলেও কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগার বা সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি) এবং অন্যান্য উপাদানের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এ অবস্থায় কয়েকটি ট্যানারির অনুকূলে পরিবেশ ছাড়পত্র প্রদান করা হলেও এখন পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়নে সময় ক্ষেপন করা হচ্ছে বলে এ সভায় জানানো হয়। আর পরিবেশগত ছাড়পত্র নবায়ন এবং তা প্রাপ্তি বিলম্বিত হওয়ায় রপ্তানিকারক হিসেবে এক্সপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা ইআরসি, আমদানিকারক হিসেবে ইমপোর্ট রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আইআরসি ও শুল্কমুক্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বন্ড সুবিধার ছাড়পত্র পেতে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে বলেও সভায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে শিল্পমন্ত্রী বলেন,‘আমরা ট্যানারি শিল্পনগরী বন্ধ করার পক্ষে নই। আমাদের কাঁচামাল আছে, জনশক্তি আছে, অভিজ্ঞতা আছে। কাজেই শিল্পনগরীর চামড়া কারখানাগুলোর সুষ্ঠু উৎপাদন কার্যক্রমের স্বার্থে পরিবেশগত ছাড়পত্রের নবায়ন ত্বরান্বিতকরণ, সিইটিপি, কার্যকর করা, আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করার পাশাপাশি কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিক পন্থায় যথাযথ করতে হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী এ সভায় ভার্চুয়ালী সংযুক্ত হয়ে বলেন, ‘আমরা চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ করছি।’
পরিবেশমন্ত্রী সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে বলেন, ‘সাভারে ২৫ হাজার ঘনমিটার তরলবর্জ্য শোধনের ক্ষমতা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার ঘনমিটার তরল বর্জ্য। এতে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে। আমাদের যৌথভাবে সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করতে হবে।’
শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, কোরবানির ঈদে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়, প্রান্তিক পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা যথাযথভাবে সেমূল্য পাননি। যার জন্য তারা মাথায় হাত দিয়ে বসে গেছে । এজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরও খোঁজ নেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন।
প্রতিমন্ত্রী  বলেন, চামড়ার মূল্য এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন-বাজার সৃষ্টির জন্য দুই মন্ত্রণালয়ের টানাটানি না করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একক সিদ্ধান্ত থাকা প্রয়োজন। 
শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা কেন্দ্রীয়ভাবে চামড়া মজুদ ও সংরক্ষণের ওপর জোর গুরুত্ব প্রদান করেন।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়