বাসস
  ২৩ জুন ২০২১, ১৩:৫৭

মদ্রিচ ঝলকে ইউরোর শেষ ১৬‘তে ক্রোয়েশিয়া

গ্ল্যাসগো, ২৩ জুন ২০২১ (বাসস) : লুকা মদ্রিচের দুর্দান্ত পারফরমেন্সে স্কটল্যান্ডকে ৩-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে ইউরো ২০২০‘র নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে ক্রোয়েশিয়া। এর মাধ্যমে প্রমবারের মত বড় কোন টুর্নামেন্টে নক আউট পর্বে যাবার স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে স্কটিশদের। 
২৩ বছরের খরা কাটিয়ে প্রথমবারের মত বৈশ্বিক কোন বড় টুর্নামেন্টে খেলতে এসেছিল স্কটল্যান্ড। চেক প্রজাতন্ত্রের বিপক্ষে ২-০ গোলে পরাজয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই ফেবারিট ইংল্যান্ডকে রুখে দিয়ে চমক দেখায় স্কটিশরা। কিন্তু কাল গ্ল্যাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে মদ্রিচ একাই ক্রোয়েশিয়াকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আর এতেই কপাল পুড়েছে স্টিভ ক্লার্কের দলের। ম্যাচের ১৭ মিনিটে নিকোলা ভøাসিচের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল সফরকারী ক্রোয়েটরা। কিন্তু ক্যালুম ম্যাকগ্রিগরের গোলে সমতায় ফিরে বিরতিতে যায় স্কটল্যান্ড। কিন্তু ৬২ মিনিটে মদ্রিচের দুর্দান্ত স্ট্রাইকে আবারো এগিয়ে যায় ক্রোয়েশিয়া। এই গোলের মাধ্যমে রিয়াল মাদ্রিদ তারকা মদ্রিচ আরো একবার প্রমান করলেন ২০১৮ সালে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর আধিপত্য শেষ করে কেন তাকে ব্যালন ডি‘অরের জন্য বেছে নেয়া হয়েছিল। ম্যাচ শেষের ১৩ মিনিটে আগে ইভান পেরিসিচের গোলে বিশ্বকাপের রানার্স-আপদের শেষ ১৬ নিশ্চিত হয়। ইংল্যান্ডের পিছনে চেক প্রজাতন্ত্রকে হটিয়ে গ্রুপ-ডি‘র দ্বিতীয় স্থানে থেকে নক আউট পর্বে গেল ক্রোয়েশিয়া। 
আগামী সোমবার কোপেনহেগেনে জøাটকো ডালিচের দল গ্রুপ-ই রানার্স-আপ দলের সাথে শেষ ১৬‘র লড়াইয়ে নামবে। গ্রুপ-ই‘তে রয়েছে স্পেন, সুইডেন, স্লোভাকিয়া ও পোল্যান্ড।
২০ বছর বয়সী মিডফিল্ডার বিলি গিলমোর করোনা পজিটিভ হওয়ায় কালকের ম্যাচে খেলতে পারেনি, যা স্কটল্যান্ডের পারফরমেন্সে অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে শুক্রবার আগের ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোলশুণ্য ড্র হওয়া ম্যাচটিতে প্রথমবারের মত জাতীয় দলের মূল একাদশে খেলতে নেমেই গিলমোর নিজেকে দারুনভাবে প্রমান করেছিলেন। যদিও ক্লার্কের দলের অন্য কোন খেলোয়াড়কে করোনা প্রোটোকল অনুযায়ী আইসোলেশনে থাকতে হয়নি। অনেকটা সামনে থেকেই কাল ১২ হাজার দর্শকের উপস্থিতিতে হ্যাম্পডেনে স্কটল্যান্ড ম্যাচ শুরু করেছিল। জন ম্যাকগিনির বিপদজনক একটি ক্রস থেকে অল্পের জন্য স্কটিশদের এগিয়ে দিতে ব্যর্থ হন চে এ্যাডামস। ১৭ মিনিটে এগিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত ক্রোয়েশিয়া তেমন কোন সুযোগ তৈরী করতে পারেনি। বক্সের ভিতর পেরিসিচের হেডের বলে ভøাসিচ তিনজন ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে লো শটে দলকে এগিয়ে দেন। এরপর ১০ মিনিটের মধ্যে পুরো মধ্যমাঠের নেতৃত নেন মদ্রিচ, মার্সেলো ব্রোজোভিচ ও মাতেও কোভাচিচ। মদ্রিচের একটি শক্তিশালী শট কোনমতে আটকে দেন স্কটিশ গোলরক্ষক ডেভিড মার্শাল। কিছুক্ষন পরে আবারো স্কটল্যান্ড ম্যাচে ফিরে আসে। বিরতির ঠিক তিন মিনিট আগে সেল্টিক মিডফিল্ডার ম্যাকগ্রিগরের গোলে সমতায় ফিওে স্কটল্যান্ড। ১৯৯৮ সালের পর বড় কোন টুর্নামেন্টে এটাই স্কটল্যান্ডের প্রথম গোল। এর আগে ম্যাকগিনের লো শট আটকাতে কোন কষ্ট করতে হয়নি ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচকে। 
মাত্র চারদিন আগে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় একটি ম্যাচ খেলার পর ক্লার্কের খেলোয়াড়দের বিরতির পর বেশ পরিশ্রান্তই মনে হয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্র ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচের মতই স্কটল্যান্ড বিরতির পর কোন ঝুঁকি নিয়ে খেলতে চায়নি। স্টুয়ার্ট আর্মস্ট্রংয়ের ক্রস থেকে ম্যাকগিন দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝিতে একটি ভাল সুযোগ নষ্ট করেন। মিনিটখানেক পরেই মদ্রিচ শেষ পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের সব আশা শেষ কওে দেন। ডান পায়ের জোড়ালো শটে বক্সের বাইরে থেকে প্রথম সুযোগেই যে শটটিতে মদ্রিচ গোল করেছেন তা অনেক খেলোয়াড়ের পক্ষেই করা সম্ভব নয়। ৭৭ মিনিটে মদ্রিচের কর্ণার থেকে ইন্টার মিলানের উইঙ্গার পেরিসিচ দলের হয়ে তৃতীয় গোলটি করেন। বিশ্বকাপ ও ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপ মিলিয়ে এটি পেরিসিচের নবম গোল।
 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়