ঢাকা, ২৭ মে ২০২৫ (বাসস) : ব্রাজিল জাতীয় দলে যোগ দিয়েই প্রথম দল ঘোষনা করেছেন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। নতুন কোচের অধীনে সেলেসাও দলে জায়গা হয়নি সুপারস্টার নেইমারের। তবে আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাইপর্বকে সামনে রেখে আনচেলত্তি দলে ফিরিয়েছেন ক্যাসেমিরো, রিচার্লিসন ও এন্টনিকে। 

দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে আগামী ৫ জুন ব্রাজিল ইকুয়েডরের বিপক্ষে মাঠে নামবে। ১০ জুন পরের ম্যাচে প্যারাগুয়েকে আতিথ্য দিবে। 

ব্রাজিলের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমার পেশীর ইনজুরি কাটিয়ে সান্তোস ক্লাবের হয়ে শেষ দুটি ম্যাচ খেলেছেন। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে তিনি জাতীয় দলের বাইরে রয়েছে। ঐ সময় আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনকালে তিনি বাম পায়ের এসিএল ও মেনিসকাস ইনজুরিতে পড়েন। 

সোমবার জাতীয় দলে যোগ দিয়ে আনচেলত্তি বলেন, ‘যারা ছন্দে আছে আমি সেসব খেলোয়াড়দের বাছাই করার চেষ্টা করেছি। নেইমার সম্প্রতি ইনজুরিতে ছিলেন। সবাই জানে নেইমার ব্রাজিলের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একজন খেলোয়াড়। সে সবসময়ই সকলের পরিকল্পনায় আছে এবং থাকবে।’

টটেনহ্যাম মিডফিল্ডার রিচার্লিসন ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড মিডফিল্ডার ক্যাসেমিরো ২০২৩ সালের অক্টোবরের পর থেকে জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। 

ব্রাজিলের হয়ে ৭৫ ম্যাচ খেলা অভিজ্ঞ ক্যাসেমিরো রিয়াল মাদ্রিদেও আনচেলত্তির অধীনে খেলেছেন। ক্যাসেমিরো প্রসঙ্গে ইতালিয়ান কোচ আনচেলত্তি বলেন, ‘আমার মতে সে একজন অসাধারন খেলোয়াড়। তার সাথে কাজ করতে পারা সৌভাগ্যের। আমি বিশ্বাস করি তার মত ব্যক্তিত্ব ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের জাতীয় দলে প্রয়োজন রয়েছে। ব্রাজিলে সবসময়ই প্রচুর প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসে। 

আধুনিক ফুটবলে প্রতিভার সাথে মনোভাব, প্রতিশ্রুতি, ত্যাগ যোগ করতে হবে, যা ক্যাসেমিরোর মধ্যে রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য যারা জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন তাদের মধ্যেও এই গুনাবলী রয়েছে।’

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল বেটিসে ধারে যোগ দেবার পর এন্টনি নিজেকে নতুনভাবে প্রমান করেছেন। আর সে কারনেই আবারো আনচেলত্তির বিবেচনায় জাতীয় দলে ফিরেছেন। তবে রাফিনহা ও ভিনিসিয়াস জুনিয়রদের মত ইন-ফর্ম তারকাদের সাথে লড়াই করেই তাকে জাতীয় দলে টিকে থাকতে হবে।  এবারের মৌসুমে লা লিগা চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় রাফিনহা ৫৪ ম্যাচে ৩৪ গোল ছাড়াও ২২টি এ্যাসিস্ট করেছেন। 

মাদ্রিদে আনচেলত্তির অন্যতম পছন্দের খেলোয়াড় ছিলেন ভিনিসিয়াস। অক্টোবরে ব্যালন-ডি’অর ট্রফি জয়ের লড়াইয়ে তিনি দ্বিতীয় স্থান পেয়েছেন। ২০১৯ সালে ব্রাজিল জাতীয় দলে অভিষিক্ত হবার পর ৩৯ ম্যাচে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬ গোল করেছেন ভিনি। তবে জাতীয় দলে তার প্রয়োজন রয়েছে এবং এখনো অনেক কিছু দেবার বাকি বলে মনে করেন আনচেলত্তি, ‘এখনই সবকিছু বলা কঠিন। কারন ভিনি এখনো নিজের সেরাটা দিতে পারেনি। সে একজন পরিশ্রমী ও লড়াকু খেলোয়াড়। তার কাছ থেকে অনেক কিছুটা পাবার বাকি রয়েছে।

একটি বিষয় নিশ্চিত যে ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে খেলার জন্য মুখিয়ে থাকে। আর এটাই তাদের স্বাভাবিক চিন্তাভাবনাকে হয়তো প্রভাবিত করে। এ কারনে কখনো কখনো ভাল খেলার প্রতি তাদের উপর বাড়তি চাপ থাকে। স্বাভাবিক ভাবেই তখন তারা ভাল পারফর্ম করতে পারেনি। আমি ভিনিকে নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট। আশা করছি জাতীয় দলের জার্সিতে সে দ্রুতই নিজেকে ফিরে পাবে।’

দক্ষিণ আমেরিকান অঞ্চল থেকে এখনো বাছাইপর্বের বাঁধা পেরুতে পারেনি ব্রাজিল। এ পর্যন্ত খেলা ১৪ ম্যাচে তারা পাঁচটিত পরাজিত হয়েছে। ১০ দলের বাছাইপর্বে এই মুহূর্তে ব্রাজিল চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

স্কোয়াড :

গোলরক্ষক : এ্যালিসন, বেনটো, হুগো সুজা

ডিফেন্ডার : এ্যালেক্সান্দ্রো, এ্যালেক্সান্দ্রো রিবেইরো, বেরালডো, কার্লোস অগাস্তো, ডানিলো, লিও ওরিজ, মারকুইনহোস,  ভেন্ডারসন, ওয়েসলি

মিডফিল্ডার : আন্দ্রেস পেরেইরা, আন্দ্রে সান্তোস, ব্রুনো গুইমারায়েস, ক্যাসেমিরো, এডারসন, জারসন
ফরোয়ার্ড : এন্টনি, এস্তেভাও, গ্যাব্রিয়েল মার্টিনেলি, মাথিয়াস কুনহা, রাফিনহা, রিচার্লিসন, ভিনিসিয়াস জুনিয়র।