বাসস
  ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ২১:১২

যুবদল নেতা হত্যার ঘটনাকে ভারতীয় মিডিয়ায় ‘হাসিনার রায় পরবর্তী সহিংসতা’ হিসেবে প্রচার : বাংলাফ্যাক্ট

ঢাকা, ১৮ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : ভারতীয় মিডিয়ায় যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে ‘হাসিনার রায় পরবর্তী সহিংসতা’ হিসেবে প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা

শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের (পিআইবি) ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম বাংলাফ্যাক্ট।

বাংলাফ্যাক্ট জানায়, ভারতীয় মিডিয়ায় যুবদল নেতা হত্যাকাণ্ডকে ‘হাসিনার রায় পরবর্তী সহিংসতা’ হিসেবে প্রচার করা হয়েছে। ধানমণ্ডি ৩২-এর ভিডিও দিয়ে এটিকে ‘আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ’ হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে।

বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, গতকাল সোমবার ঢাকায় যুবদল নেতা হত্যার ঘটনাকে হাসিনার রায় পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে প্রচার করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার ও ইন্ডিয়া টুডে। অথচ এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রায় কিংবা এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। আনন্দবাজার পত্রিকাটি শেখ হাসিনার রায় ঘোষণার পর ‘দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে’ উল্লেখ করে লিখেছে, ‘বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ডেলি স্টার’ জানাচ্ছে, সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার পল্লবী থানা এলাকায় যুবদল (বিএনপি-র যুব শাখা)-এর এক কর্মীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে।’ ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনেও এই ঘটনার সঙ্গে রায়ের কোনো সংযোগ নেই।

ইন্ডিয়া টুডে তাদের প্রতিবেদনে এই হত্যাকাণ্ডকে রায় পরবর্তী সহিংসতা হিসেবে প্রচারের পাশাপাশি ‘আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সঙ্গে তাদের বিরোধীদের ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে’ লিখেছে, যার কোনো সত্যতা নেই। 

গতকাল সোমবার রায়ের পর আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটেনি। গণমাধ্যমটি এরপর তাদের প্রতিবেদনে একটি ভিডিও দিয়েছে, যেটি আদতে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের ঘটনা। সেখানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু এই আন্দোলনকারীরা আওয়ামী সমর্থক নন, তারা রায়ের বিরোধিতাও করেননি।

বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানায়, ভারতীয় মিডিয়ায় ‘রায় পরবর্তী সহিংসতায়’ যে দু’জনের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তাদের আরেকজন হলেন বরিশালের বাবুগঞ্জের জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম (৩০)। শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর বাবুগঞ্জ উপজেলায় মিষ্টি বিতরণ অনুষ্ঠানে দাওয়াত পাওয়া না-পাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষ ও এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানায় পুলিশ।

গত বছর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যম এবং ভারত থেকে পরিচালিত বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, পাশাপাশি দেশেও বিভিন্ন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে বাংলাদেশকে জড়িয়ে, অন্তর্বর্তী সরকার, চব্বিশের আন্দোলনে অংশ নেওয়া দল ও সংগঠনের বিরুদ্ধে গুজব, ভুয়া তথ্য প্রচারের হার বৃদ্ধি পেয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠানগুলো।

‘বাংলাফ্যাক্ট’ প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ পিআইবি’র ফ্যাক্টচেক, মিডিয়া রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস টিম, যারা নিয়মিত ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য যাচাই করে সত্য তুলে ধরে এবং গণমাধ্যম ও সংবাদ নিয়ে গবেষণা করে।

ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া শত শত ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে বাংলাদেশের ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান বাংলাফ্যাক্ট। বাংলাদেশে চলমান গুজব এবং ভুয়া খবর, অপতথ্য প্রতিরোধ এবং জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ায় দায়িত্ব পালন করছে বাংলাফ্যাক্ট।