শিরোনাম
রংপুর, ৩ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেছেন, স্বৈরাচারী পতিত হাসিনা সরকার কথা দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনার স্বপ্ন ডুবিয়ে দিয়েছে। আমরা আর আশাহত হতে চাই না। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আগে রাষ্ট্রের নিজস্ব কোষাগারের টাকা দিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে হবে। পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার এই কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে।
আজ শুক্রবার রংপুর চেম্বার ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
দুলু বলেন, তিস্তা মহাপরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের ব্যয় ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১২ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে চীনের কাছ থেকে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে এবং বাকি ২ হাজার ৪১৫ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। তবে চীনের সঙ্গে এখনও ঋণ ও প্রযুক্তি চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কাজ করছে এবং চলতি বছরের শেষের দিকে চুক্তি সম্পন্ন হতে পারে।
তিনি বলেন, একনেক সভায় জরুরি অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে এবং অন্তর্র্বর্তী সরকারের মেয়াদেই তিস্তা মহাপরিকল্পনার কাজ শুরু করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে এ দাবি আদায় করা হবে।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে দুলু বলেন, ‘বৈষম্যপীড়িত তিস্তা অববাহিকার ২ কোটি মানুষের প্রাণের দাবি হলো তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।’
তিনি বলেন, গত ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে ১১৫ কিলোমিটার বিস্তৃত তিস্তার দুই তীরে ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। এতে তিস্তাপাড়ের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি এতে অংশ নিয়ে দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন, তিস্তা বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদ ও স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো এই দাবিতে একতাবদ্ধ হয়েছে।
দুলু জানান, অন্তর্র্বর্তী সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে আন্তরিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত ৬ ফেব্রুয়ারি কাউনিয়া রেলসেতুতে অনুষ্ঠিত তিস্তা গণশুনানিতে হাজারো মানুষ প্রকল্প বাস্তবায়নের পক্ষে মতামত দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। ঘর পোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলে ডরায়। আমরা আর কোনো প্রতিশ্রুতি চাই না, এখন প্রকল্পের কাজের শুরু দেখতে চাই। এটি আমাদের ২ কোটি মানুষের প্রাণের দাবি।’
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন আগামী ৫, ৯ ও ১৬ অক্টোবর তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে বড় কর্মসূচি পালন করবে। এতে থাকবে পদযাত্রা, স্মারকলিপি প্রদান, গণমিছিল, গণসমাবেশ ও মশাল প্রজ্জ্বলন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব আনিছুর রহমান লাকুসসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।